বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ০৬:৫৪:৩৪

সৌদি যুবরাজ সালমানের প্রশংসায় ট্রাম্প, বললেন : ‘তুমি কি রাতে ঘুমাও?’

সৌদি যুবরাজ সালমানের প্রশংসায় ট্রাম্প, বললেন : ‘তুমি কি রাতে ঘুমাও?’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের নেতৃত্বে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)-এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে যুবরাজকে লক্ষ্য করে ব্যতিক্রমধর্মী এক প্রশ্নও ছুড়ে দেন তিনি— ‘তুমি কি রাতে আদৌ ঘুমাও?’

স্থানীয় সময় বুধবার সৌদি রাজধানী রিয়াদে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, ‘মোহাম্মদ, তুমি কি রাতে ঘুমাও? কীভাবে ঘুমাতে পারো তুমি?’ —এই প্রশ্নের মাধ্যমে তিনি সৌদি আরবের ডি-ফ্যাক্টো শাসক এমবিএস-এর কঠোর পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তিনি আমাদের অনেকের মতোই সারা রাত এপাশ-ওপাশ করেন এই ভাবনায়— কীভাবে আরও ভালো করা যায়। যারা রাতে এমন করে না, তারা কখনও আপনাকে প্রতিশ্রুত ভূমিতে নিয়ে যেতে পারবে না।’

৭৮ বছর বয়সী এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সমালোচকেরা মনে করেছিল সৌদির উত্থান সম্ভব নয়। কিন্তু গত আট বছরে সৌদি আরব তাদের ভুল প্রমাণ করেছে। কী দারুণ কাজ করেছে যুবরাজ! আমি তাকে পছন্দ করি, সত্যিই অনেক বেশি পছন্দ করি।’

ট্রাম্পের এমন উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান হাসিমুখে প্রতিক্রিয়া জানান এবং উপস্থিত দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প জানান, এমবিএস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের অনুরোধে তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছেন। এ সময় ট্রাম্প রসিকতার সুরে বলেন, ‘আহ, যুবরাজের জন্য আমি কত কিছুই না করি!’

বক্তব্যে ট্রাম্প সৌদি আরবকে ‘বিশ্বের কেন্দ্র’ বলেও উল্লেখ করেন। তবে সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি বা ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

সম্মেলনে ট্রাম্প ১৪২ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্যাকেজের কথা তুলে ধরেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ও এমবিএসের সম্পর্ক মূলত অভিন্ন স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ট্রাম্প যেখানে বড় অর্থনৈতিক সাফল্য ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পুনরুত্থান চান, সেখানে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান খুঁজছেন উন্নত প্রযুক্তি, সামরিক সহায়তা ও আঞ্চলিক নেতৃত্বের জন্য একটি শক্তিশালী মিত্র।

তবে এই ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ট্রাম্প সমালোচনার মুখে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা, মানবাধিকার সংগঠন এবং পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সম্পর্ক অর্থনৈতিক স্বার্থকে মানবাধিকারের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে