আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একজন মুসলিম পুরুষ একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখতে পারেন বলে জানিয়েছেন ভারতের একটি হাইকোর্ট। তবে এক্ষেত্রে শর্তও দেওয়া হয়েছে।
আদালত বলেছে, সব স্ত্রীর সঙ্গে সমান আচরণ করলে অর্থাৎ সব স্ত্রীকে সমান মর্যাদা ও অধিকার দিলেই একাধিক বিয়ে করতে পারবেন পুরুষরা। খবর এনডিটিভির।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একজন মুসলিম পুরুষ ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী একাধিক (সর্বোচ্চ চারটি) বিয়ে করতে পারেন বলে সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে। তবে শর্ত হলো তিনি সব স্ত্রীকে সমান মর্যাদা ও ন্যায্যতা দেবেন।
আদালত আরো বলেছে, কোরআনে নির্দিষ্ট কারণে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে অনেক পুরুষই একে নিজস্ব স্বার্থে অপব্যবহার করেন।
এনডিটিভি বলছে, এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি অরুণ কুমার সিং দেশওয়াল একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করন।
সেই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম—ফুরকান। তিনি মোরাদাবাদের একটি আদালতের চার্জশিট, সমন এবং বিচার শুরুর আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঘটনাটি ২০২০ সালের। অভিযোগে বলা হয়, ফুরকান এক নারীকে বিয়ে করেন তার আগের বিয়ের তথ্য গোপন রেখে।
ওই নারী দাবি করেন, বিয়ের পর তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে মোরাদাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের হয় এবং ফুরকানসহ তিনজনের নামে সমন জারি করা হয়।
ফুরকানের পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেন, ওই নারী নিজেই স্বীকার করেছেন যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং সম্পর্কের ভিত্তিতেই বিয়ে হয়েছে। তাই এটা জালিয়াতি বা গোপন বিয়ে হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, ফুরকান তার আগের বিয়ের বিষয়টি গোপন করলেও একাধিক বিয়ে মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী বৈধ হওয়ায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারার (একাধিক স্ত্রী থাকা অবস্থায় পুনরায় বিবাহ) অধীনে তার বিরুদ্ধে এই অপরাধের বিষয়টি প্রযোজ্য নয়।
বিচারপতি দেশওয়াল বলেন, ইসলামে চারটি পর্যন্ত বিয়ের অনুমতি রয়েছে, তবে তা নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষ এবং বৈধ কারণ থাকতে হবে। তিনি বলেন, অনেক সময় এই বিধানকে স্বার্থপরভাবে ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘শরিয়ত অ্যাক্ট, ১৯৩৭’-এর আলোকে মুসলিম ব্যক্তির বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিচার করা উচিত। পাশাপাশি তিনি ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) চালুর পক্ষেও মত দেন—যাতে সব ধর্মে বিয়ের নিয়ম একই করা যায়।