বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬, ১০:৪৬:৪১

ব্রাসেলসের হামলার বর্ণনায় শিউরে উঠবেন আপনিও

ব্রাসেলসের হামলার বর্ণনায় শিউরে উঠবেন আপনিও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রক্তাত্ব বেলিজিয়ামের ব্রাসেলস। আতঙ্ক যেন সবার চোখে মুখে লেপটে আছে। কারো কারো কাছে দিনটা যে একটা দুঃস্বপ্ন। কিন্তু না। এই দিনটি যে তাদের কাছে কতটা ভয়াবহ, তা কেবল তারাই জানে। আর তাই তো ভয়ে বারবারই আঁতকে উঠছে এখানকার মানুষ।

আবারও কি এমন ভয়াবহ কোন হামলা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে? ভাবতেই শিউরে উঠছে দেশটির বাসিন্দারা। প্রতি দিনের মতোই মালবিক স্টেশন ছেড়ে এগোচ্ছিল মেট্রো। হঠাৎই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ শেষ কামরায়! ব্রাসেলসের ঘড়িতে তখন ঠিক সকাল নয়টা এগারো।

মেট্রোর যাত্রী ইভান লেমোস জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পরে সুড়ঙ্গের মধ্যেই নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। অন্ধকার রক্তাক্ত সুড়ঙ্গে ধোঁয়ার কুণ্ডলীর মধ্যে দিয়ে হেঁটেই তারা পৌঁছন পরের স্টেশনে।

মালবিক স্টেশনের খুব কাছেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দপ্তর। তার একটিতে কাজ করেন হ্যাঙ্ক স্টুটেন। প্রথমে একটা জোর শব্দ পান স্টুটেন ও সহকর্মীরা। তার পরেই অফিসটা কেঁপে ওঠে। বেরিয়ে আসেন সকলে। স্টেশন থেকেও তখন দলে দলে বেরিয়ে আসছেন আতঙ্কিত যাত্রীরা।

স্টুটেন বলছেন, বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট আগেই আমার কয়েক জন সহকর্মী মেট্রোয় চেপে এসেছেন। বুঝতে পারছেন, এ সব ঘটনা কী ভাবে আপনার ঘাড়ে এসে পড়তে পারে?

এ ঘটনার ঘণ্টা দেড়েক আগেই আরও ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছে জাভেন্তেম বিমানবন্দর। সকাল আটটায় সেখানে পরপর দু’টি বিস্ফোরণ হয়। একটা বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর রাস্তায়। অন্যটা আমেরিকান এয়ারলাইন্সের চেক-ইন ডেস্কের কাছে।

ব্রাসেলসের সাংবাদিক মার্টিন বাক্সান্টকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রথম বিস্ফোরণের পরে কয়েকটি দেহ উপর দিকে ছিটকে গেল। তার পরে মেঝেতে আছড়ে পড়ল। তার কিছু ক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। আরও বড়, আরও ভয়ঙ্কর। ব্যস্ত জাভেন্তেমের তখন লন্ডভন্ড অবস্থা।

বিমানবন্দরের একটি একটি রেস্তোরাঁর কর্মচারি সামির দেরুইশ বলছেন, বিস্ফোরণের শব্দ শুনেই বেরোনোর রাস্তার দিকে ছুটতে শুরু করি। আমার মনে হয়েছিল জঙ্গিরা বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়েছে। তাই পালানোই ভাল।

তার মত একই ভেবেছিলেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী দ্রি ভালায়ে। তিনি বলছেন, আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা চালিয়েছে বলে মনে হয়নি। পুলিশ অবশ্য জানাচ্ছে, বিমানবন্দরে হানায় আত্মঘাতী জঙ্গিরা জড়িত ছিল।

এ ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরোনোর পরেও চমকে উঠছিলেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী আলফোন্স ইয়ুলা অন্তত জনা সাতেককে চোখের সামনে মরতে দেখেছেন তিনি। তার মধ্যে কারও কারও শরীর থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল পা। চোখের জল মুছতে মুছতে ইয়ুলা বললেন, কিচ্ছু করতে পারলাম না। চোখের সামনে মারা গেলেন ওরা।

ব্রাসেলস প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন কেউ কেউ। ট্যাক্সিচালক ফিলিপ্পি উত্তেজিত স্বরে বলছেন, বিমানবন্দরের টার্মিনাল রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। পুলিশ, অনেক ক্ষণ পরে এসেছে।
২৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে