সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬, ০৩:৫৮:৪৪

ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে ভারতে একজন খুন, দায়ী বাংলাদেশীরা!

ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে ভারতে একজন খুন, দায়ী বাংলাদেশীরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে ভারতে সম্প্রতি এক ডাক্তার খুন হোন। আর এই খুনের ঘটনা নিয়ে ভারতে চলছে লঙ্কাকাণ্ড। পায়তারা চলছে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ইস্যু করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার লাগানোর। আর সে দিকেই হেঁটে যাচ্ছে ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।

সম্প্রতি এ হত্যায় বাংলাদেশীরা জড়িত বলে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। তারা এ ইস্যুতে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যদিও দিল্লির পুলিশ শনিবার ওই হত্যাকাণ্ডে সাম্প্রদায়িকতার কোন লেশমাত্র নেই বলে দাবি করেছে।

পুলিশ বলছে, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনায়ও হত্যা করা হয়নি ওই দন্ত চিকিৎসককে। এতে কোন বাংলাদেশীও জড়িত নয়। তবে যে ঘটনায় ওই ডাক্তারকে হত্যা করা হয়েছিল তাতে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকই জড়িত।

রোববার ডানপন্থি সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ওই ডাক্তারকে হত্যার জন্য দায়ী অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীরা’। এ সংগঠনের জাতীয় আহ্বায়ক বিনোদ বনসাল বলেন, যেহেতু ডাক্তার নারাং ছিলেন একজন হিন্দু তাই কোন ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি তার পরিবারকে দেখতে আসেননি। অন্যদিকে দাদ্রিতে আখলাকের বাসভবনে রাজনীতিকদের লাইন পড়ে গিয়েছিল।

উল্লেখ্য, গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে দিল্লির দাদ্রিতে মোহাম্মদ আখলাকের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তাকে প্রহার করে হত্যা করা হয়। বিকাশপুরীতে দাঁতের ডাক্তারকে হত্যার জন্য এরই মধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অভিযুক্ত নাসির ও একজন কিশোর উত্তম নগরের উদ্দেশে যাত্রা করে। সেখানে গিয়ে তারা ওই ডাক্তারের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে হত্যা করা হয় ওই ডাক্তারকে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলছেন, আমাদের তদন্ত বলছে যে অভিযুক্তদের বেশির ভাগই ওইদিনের ম্যাচ দেখেছে এবং তারা ভারতের বিজয় উদযাপন করেছে। তাই আমরা পরিষ্কার করে বলেছি যে, ডাক্তারের সঙ্গে তাদের যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয় তা খেলা নিয়ে নয়, যদিও এ নিয়ে সামাজিক মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত একজন পালিয়ে আছে। পুলিশ এখন তাকে খুঁজছে।

ওদিকে ডাক্তার নারাংয়ের বাসভবনের কাছেই বস্তি এলাকায় এক ধরণের হিম আতঙ্ক। যারা এ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে পুলিশ।

অন্যদিকে এরই মধ্যে শহরের দাঁতের চিকিৎসকরা বিক্ষোভ করছেন এই হত্যাকাণ্ডের। রোববার তারা মোমবাতি মিছিল করেছেন। ইন্ডিয়ান ডেন্টাল এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীণ বর্মা বলেছেন, ডাক্তার পঙ্কজ নারাং ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। তাই আমরা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাই তার পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেয়ার। পাশাপাশি তাদের ক্ষতিপূরণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতের আবেদন জানাই।
১৮ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে