আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তথ্যপ্রযুক্তিতে ভারতীয়রা বেশি দক্ষ, সব কাজ তাদের হাতে চলে যায়, সে নিয়ে আমেরিকার চোরা রাগ বহু বছরের। এমনকি তাবড় মার্কিন সংস্থার গ্রাহক পরিষেবার জন্য যেসব কল সেন্টার আছে, তার কাজও আউটসোর্স হয়ে চলে যায় ভারতে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির টিকিট পেতে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবারই সেই রাগ খুঁচিয়ে তোলেন।
দেশের কাজ দেশেই থাকুক, বিদেশিদের খেদিয়ে দেওয়া উচিত জিগির তুলে মার্কিন আত্মম্ভরিতার ভরণপোষণ করেন। প্রায়শই এই বিদেশি বিরোধিতা সম্প্রদায়িক বিদ্বেষের পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু এবার ভদ্রতা, সৌজন্যের চৌকাঠটাও পেরিয়ে গেলেন ট্রাম্প। ডেলাওয়ারে এক প্রচারসভায় ভেঙিয়ে দেখালেন, কল সেন্টারের ভারতীয় কর্মীরা কীভাবে ইংরেজি বলেন। ডেলাওয়ারে প্রচুর ব্যাঙ্ক। বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ড সংস্থার দপ্তরও আছে সেখানে। তাদের ক্রেতা পরিষেবার কাজ বেহাত হয়ে চলে যায় ভারতের কল সেন্টারে।
সেই ডেলাওয়ারে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প রসিকতার ঢঙে বললেন, ‘আমার ক্রেডিট কার্ডের কাস্টমার সার্ভিস কারা দেখে না জানার ভান করে ফোন করেছিলাম, যেন সত্যি কিছু জানতে চাইছি! জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কোথা থেকে কথা বলছেন?’ এর পরই ভারতীয়দের ইংরেজি বলার ভঙ্গি নকল করে ট্রাম্প নিজেই জবাব দেন, ‘ভারত থেকে বলছি!’ এরপর ‘ওহ! দারুণ!’ বলে ফোন রেখে দেওয়ার ভঙ্গি করেন ট্রাম্প।
তার পর টিপ্পনি, ‘এভাবে প্রচুর রোজগার করে নিচ্ছে ভারত’। ঠাট্টা–তামাশার পর বোধহয় খেয়াল হয় যে, সস্তায় কাজ তুলতে হলে ভারত ছাড়া গতি নেই। তাই বললেন, ভারত অসাধারণ একটি দেশ! ভারতের ওপর তার কোনও রাগ নেই। চীন, জাপান, ভিয়েতনামের ওপরেও রাগ নেই। তার সব রাগ আমেরিকার ‘নির্বোধ’ নেতাদের ওপরে। ওদের ভুল নীতির জেরে আমেরিকার সম্পত্তি ওই সব দেশের হাতে চলে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের কথায়, ‘আমেরিকা সবদিক থেকে হেরে যাচ্ছে! কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চাকরি চুরি হয়ে যাচ্ছে, ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমেরিকার অবস্থা সেই শিশুটির মতো, যার হাত থেকে জোর করে লজেন্স কেড়ে নেওয়া হয়েছে! এভাবে চলতে দেওয়া যায় না!’
২৪ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস