রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৭:১৫:৪৭

‌‌যুদ্ধের জন্য তৈরি চিন, চিন্তায় ভারত

‌‌যুদ্ধের জন্য তৈরি  চিন, চিন্তায় ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বড়সড় যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে এগোচ্ছে চিন। সামরিক তথা রাষ্ট্র কাঠামোয় তাৎপর্যপূর্ণ বদল আনল চিনের কমিউনিস্ট সরকার। তৈরি করা হল নতুন শীর্ষ সামরিক পদ। চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং চিনের ‘জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড’-এর কম্যান্ডার-ইন-চিফ হলেন। যুদ্ধের সময় চিনের সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখার মধ্যে আরও বেশি সমন্বয় এবং আরও বেশি বোঝাপড়ার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে এই সেন্ট্রাল ব্যাটল কম্যান্ড।

চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক যিনি হন, তাঁকেই সে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত করে চিনা ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেস। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যানও হন। অর্থাৎ দল, সরকার এবং সেনাবাহিনীর সার্বিক নিয়ন্ত্রণ তাকে এক জনেরই হাতে। সেই নিয়ন্ত্রণকে এ বার আরও সুদৃঢ় করল চিন। সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের অধীনে তৈরি করা হল জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড। সেই সংস্থার প্রধান হলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। চিনের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ডের কম্যান্ডার-ইন চিফ হলেন।

প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং যখন সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কোনও কর্মসূচিতে অংশ নেন, তখন তিনি মাও জে দং-এর মতো অলিভ গ্রিন স্যুট পরেন। জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড ওই কমিশনের অধীনস্থ হিসেবে তৈরি হলেও, তা যে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করবে এবং তার গুরুত্বও যে অপরিসীম, তা বুঝিয়ে দিয়েছে শি চিনফিং-এর নতুন পোশাক। বুধবার জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ডের প্রধান হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করার সময় তিনি ক্যামোফ্লাজ ইউনিফর্ম পরে এসেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার সময়ই সেনা এই পোশাক ব্যবহার করে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধকালীন সময়ের কথা মাথায় রেখেই জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড তৈরি করল চিন। যুদ্ধের সময় স্থলবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর মধ্যে নিখুঁত সমন্বয় এবং ১০০ শতাংশ বোঝাপড়া থাকার প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নির্দেশ দেওয়ার কেন্দ্রও একটিই হওয়া উচিত। তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুততর হয় এবং আপৎকালীন অবস্থায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে সময় অনেক কম লাগে। সমর বিশারদরা বলছেন, তিন বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য সব সময় প্রস্তুত রাখতেই চিন এই নতুন পদক্ষেপ নিল। এই বিশাল পদক্ষেপের মধ্যে, যুদ্ধ সম্পর্কে চিনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গীও খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, শুধুমাত্র ঘোষিত যুদ্ধ নয়, চিন এখন অঘোষিত ভাবেই যুদ্ধ শুরু করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। সামনাসামনি গোলাগুলি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া নয়, বরং বিভিন্ন সীমান্তে এবং জলসীমায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বাড়াতে ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু করে দিতে চায় চিন। তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়িয়ে সেই পথে এগোতে চান চিনফিং। তাই গঠিত হল জয়েন্ট ব্যাটল কম্যান্ড। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের এই বাখ্যা যদি ঠিক হয়, তা হলে আরও সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে ভারতের জন্য।- এবিপি

২৪ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে