আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতকে হিন্দু জাতিরাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে আগামী ১৯-২৫ জুন গোয়াতে একটি কনভেনশন ডাকা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, মালয়েশিয়া থেকে প্রতিনিধিসহ দুশতাধিক হিন্দু সংগঠন অংশ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ওই কনভেনশনের আয়োজক সংস্থা হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি।
মুম্বই ডেটলাইনে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি, যে সংগঠনের কর্মীরা এর আগে ড. নরেন্দ্র ধাবলকার ও গোবিন্দ পানসারিকে হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের মূল সংগঠন হলো সনাতন সংস্থা।
সমিতি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বে ১৫৭টি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র, ৫২টি মুসলিম রাষ্ট্র,১২টি বৌদ্ধ রাষ্ট্র, একটি ইহুদি রাষ্ট্র আছে। অথচ হিন্দুদের জন্য একটিও জাতিরাষ্ট্র নেই।
সমিতি হিন্দুদের ‘দুর্ভোগের’ জন্য ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে দায়ী করে বলেছে, ভারতকে একটি ধর্মরাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।
সমিতির মুখপাত্র অরবিন্দ পানসারে বলেছেন, ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করা হলে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা, ধর্মান্তরকরণ রোধ এবং মন্দিরভিত্তিক ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি ঘটানোসহ হিন্দু ঐতিহ্যের বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
কাশ্মীরে বিজেপি সেখানকার পিডিপির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধার কারণে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে। কারণ সমিতি মনে করে পিডিপি বিচ্ছিন্নতাবাদী। বিজেপি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করার কারণে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৪শে জুন টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির জাতীয় মুখপাত্র রমেশ সিন্ধে রামনাথ মন্দির চত্বরে আয়োজিত এক কনভেনশনে হিন্দুদের আধ্যাত্মিক চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে এবং ধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে শক্তি বাড়াতে হবে।
ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ ভারতে সন্ত্রাসী হামলার জন্য টার্গেট করেছে। তাই ভারতবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তার কথায়, যখন হিন্দুদের উপাসনালয়কে টার্গেট করা হয় তখন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। কিন্তু মিয়ানমারে যখনই মুসলিম সম্প্রদায় আক্রান্ত হলো তখন মুম্বইয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় হিন্দুরা আক্রান্ত হলো।
একনিষ্ঠ হিন্দু ও হিন্দু আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন এইচভিপি-র ন্যাশনাল সেক্রেটারি সঞ্জিব পুনালেকর ভারতের পণ্ডাতালুকায় অবস্থিত রামনাথ মন্দিরে আয়োজিত অল ইন্ডিয়া হিন্দু কনভেনশনে বলেছিলেন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রোধে হিন্দুদের আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া আরো উল্লেখ করে যে, ওই সম্মেলনে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি এডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ বাংলাদেশের হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদ বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশে ৩৯ ভাগ হিন্দু ছিল অথচ আজ সেটা ৯ দশমিক ৪৬ ভাগে নেমে এসেছে। তারা এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে চায় না, কারণ তারা একটি অবিভক্ত জাতির অংশে পরিণত হতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি (এইসজেএস) ওই কনভেনশন আয়োজন করেছিল, আর এখন দুই বছরের ব্যবধানে এবারে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে একই সংগঠন সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে।
৩১ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম