আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা মোকাবিলায় নরেন্দ্র মোদি সরকারের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে ফোনে আলোচনার পর সনিয়া এক বিবৃতিতে বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আপস করা হবে না।
হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান মুজফ্ফর ওয়ানির মৃত্যুর পর জনতা-নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের বিদেশসচিব আজ ভারতের হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতির নিন্দা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদির বিদেশ সফরের সময় এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বলেই রাজনীতির কারবারিদের ধারণা। তাঁদের মতে, সেকারণেই মোদীর আফ্রিকা সফরের মাঝপথে তাঁর সফরসঙ্গী তথা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল আজ দেশে ফিরেছেন। আগামিকাল দেশে ফিরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
সনিয়ার পাশাপাশি রাজনাথ আজ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও আলোচনা করেন। কেন্দ্রের একটি সূত্র জানাচ্ছে, উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মোকাবিলায় বিরোধী দলগুলিকে সঙ্গে নিয়েই কেন্দ্র এগোতে চাইছে। ওমর আজ বলেন, আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক দায়িত্ব জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের। শান্তি ফেরাতে জনগণের সাহায্য চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
এদিকে, কাশ্মীর উপত্যকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে জীবনহানির ঘটনা নিয়ে আজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তাঁর দফতরের তরফে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুরহানের মৃত্যু এবং তার পরে ভারতীয় সেনা ও আধাসেনার গুলিতে নিরীহ নাগরিকদের নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।
পাক-খোঁচার জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজুর প্রতিক্রিয়া, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এ নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কোনও কথা বলার অধিবার নেই। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, প্রতিবেশীর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের প্রবণতা থেকে দূরে থাকা উচিত পাকিস্তানের। কট্টরপন্থী সংগঠন জামাত-উদ–দাওয়ার প্রধান হাফিজ মহম্মদ সঈদ এবং পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলির নেতারাও কাশ্মীরের অশান্তির জন্য নয়াদিল্লিকে দুষেছেন।
আজ উত্তর কাশ্মীরের কেরান সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিও ছোড়ে পাক ফৌজ। এই ঘটনায় এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। অনন্তনাগের বিজবিহারার কাছে নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। আহত হয়েছেন দু’জন গ্রামবাসী। তবে আজ ফের চালু হয়েছে অমরনাথ যাত্রা। এবেলা
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম