আন্তর্জতিক ডেস্ক : সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ৪৫ হাজার মানুষকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, না হয় তাদেরকে সামরিয়ক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫২০০ শিক্ষক ও শিক্ষা বিভাগের স্টাফকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫৭৭ জন ডিনকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৮৭৭৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই পুলিশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসে কর্মরত ২৫৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মিডিয়া পরিচালনা পরিষদ মঙ্গলবার ২৪টি রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স বাতিল করেছে।
এর আগে সেনাবাহিনীর ৬ হাজারের বেশি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। বরখাস্ত করা হয় প্রায় ৩ হাজার বিচারককে। এর আওতায় রয়েছেন শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও মিডিয়া।
সরকার বলছে, এসব মানুষ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের মিত্র। এভাবে হাজার হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীকে বরখাস্তের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উদ্বিগ্ন। ফলে জাতিসংঘ আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছে তুরস্কের প্রতি।
অভ্যুত্থানের জন্য ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করছে তুরস্ক। কিন্তু তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গুলেনের সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। তিনি পার্লামেন্টে বলেছেন, আমরা তাদের শিকড় সহ উৎপাটন করবো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ফেতুল্লাহ গুলেনকে দেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে তুরস্ক। হোয়াইট হাউজ থেকে বলা হয়েছে, এ নিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি এ সময় গুলেনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানোর বিষয় তুলে ধরেন।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জোস আর্নেস্ট বলেছেন, গুলেনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে কিনা তা দু’দেশের মধ্যকার চুক্তির অধীনে নির্ধারণ করা হবে। তবে তুরস্ক সরকারের এক মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, ফেতুল্লাহ গুলেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দিকে না তাকিয়ে তাকে ফেরত পাঠানোই উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের। তিনি বলেন, ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে গুলেনের জড়িত থাকার বিষয়ে জোরালো সন্দেহ আছে। এটাই তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য যথেষ্ট।
অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগকে গুলেন অবশ্য ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিশোধের জন্য ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করতে আমি মার্কিন সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।
২০ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম