মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০৯:৫৩:৫৭

নাম করা নায়িকা থেকে ভিক্ষার ঝুলিতে এখন জীবন সংগ্রাম চলছে তাদের

নাম করা নায়িকা থেকে ভিক্ষার ঝুলিতে এখন জীবন সংগ্রাম চলছে তাদের

বিনোদন ডেস্ক: গ্ল্যামার-দুনিয়া। এ দুনিয়া মনেই খ্যাতি, অর্থ, প্রতিপত্তি আর জৌলুস। তবে কেউ যদি অসতর্ক হয়ে অন্ধকার জগতে পা বাড়ায় তখন তার পরিণতি দিকও রয়েছে। কখনো রাজা পলকে ভিখারী হয়ে পড়ে।

নাম করা নায়িকা থেকে ভিক্ষার ঝুলিতে এখন জীবন সংগ্রাম চলছে তাদের। টালিউডের মডেল গীতাঞ্জলি নাগপালের জীবন সেই সত্যকেই প্রমাণিত করে। ১৯৯০-এর দশকে দিল্লির মেয়ে গীতাঞ্জলি ছিলেন মডেলিং দুনিয়ার পরিচিত নাম। সুস্মিতা সেনের মতো মডেলের সঙ্গে র‌্যাম্পে অনেকবার হাঁটতে দেখা গেছে তাকে।

গীতার বাবা ছিলেন নেভি অফিসার। মাউন্ট ক্যারমেল স্কুল কিংবা শ্রীরাম কলেজের মতো নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেটেছিল তার শিক্ষা জীবন। পড়াশোনা শেষ করে মডেলিং-কে বেছে নেন পেশা হিসেবে। ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে মডেলিং দুনিয়ায় বেশ ভালো কাজ পেলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসতে থাকে গীতাঞ্জলির খ্যাতি।

২০০০-এর দর্শকের শুরুর দিকে প্রবল অর্থাভাবে আক্রান্ত হয়ে বন্ধুবান্ধবদের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাততে দেখা যায় গীতাঞ্জলিকে। কয়েক বছর পরে একেবারে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান এই মডেল। কেউ আর তার খোঁজই রাখেননি। পুনরায় তার দেখা মেলে ২০০৭ সালে। কিন্তু তখন আর সেই আগের গীতাঞ্জলি নেই তিনি। দামি পোশাকের জায়গায় গায়ে উঠেছে ছেঁড়া আধময়লা পোশাক। রেশমের মতো চুল জট আর ময়লায় ক্লেদাক্ত। দক্ষিণ দিল্লির হাউজ খাস এলাকায় তখন তিনি রাস্তার মেড়ে মোড়ে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন।

কিছু মিডিয়া ফোটোগ্রাফার চিনে ফেলেন গীতাঞ্জলিকে। তারা গীতাকে দেখেই তার ছবি তুলতে শুরু করেন। গীতাও একেবারে পেশাদার মডেলের মতো পোজ দিতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাকে ঘিরে মিডিয়া পার্সনদের ভিড় জমে যায়। কিন্তু কী ভাবে পালঙ্ক থেকে রাস্তার ফুটপাথে নেমে এলেন গীতাঞ্জলি?

নিজেই সংবাদমাধ্যমের সামনে ব্যক্ত করেন সেই কাহিনি। জানান, খ্যাতির শিখর থেকে একটু একটু করে যখন অবতরণ শুরু হয় তার, তখনই ড্রাগের নেশায় আসক্ত হন তিনি। সর্বগ্রাসী নেশায় একেবারে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে যান। পেশায় মন্দা আগেই দেখা দিয়েছিল, আস্তে আস্তে নেশার অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। সে এক ভয়ঙ্কর সময় গিয়েছে। গীতাঞ্জলি মাদকদ্রব্য পাওয়ার আশায় কখনো অচেনা-অজানা পুরুষদের শয্যাসঙ্গিনী হচ্ছেন, কখনো বা পরিচারিকা হিসেবে কাজ করছেন। কিছু দিন পরে সেই অর্থ রোজগারের এই পথও বন্ধ হয়।

ভিক্ষাজীবীতে পরিণত হন গীতাঞ্জলি। তার রাত কাটতে থাকে খোলা আকাশের নিচে ফুটপাথে, কখনো বা কোনো মন্দিরের চাতালে। ২০০৭-এ ফুটপাথ থেকে অপ্রত্যাশিত আবিষ্কারের পরে মিডিয়ার নজর নতুন করে পড়ে গীতার ওপর। আবার যেন পুরনো দিনের গ্ল্যামারাস জীবনের স্বাদ ফিরে পান তিনি।

আবার ঝাঁকে ঝাঁকে ক্যামেরা ধাওয়া করতে শুরু করে তাকে। পেজ থ্রি-তে আবার ছাপা হতে থাকে তার ছবি। কিন্তু সেই মিডিয়া-অ্যাটেনশান উপভোগ করার মন তখন গীতার ছিল কি না, তা বলা মুশকিল। কারণ তখন গীতা শুধু যে ভিক্ষাজীবীতে পরিণত হয়েছেন তা নয়, পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতাও দেখা দিয়েছে তার। দিল্লির মহিলা কমিশনের উদ্যোগে এক মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় তার।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে