মঙ্গলবার, ০২ মে, ২০১৭, ১১:১৮:৫১

বাহুবলির দাপটে ম্লান বাংলা ছবি, বাহুবলিতে মজেছেন বাঙালি দর্শকরাও

বাহুবলির দাপটে ম্লান বাংলা ছবি, বাহুবলিতে মজেছেন বাঙালি দর্শকরাও

বিনোদন ডেস্ক : দক্ষিণের সিনেমা। নায়ক, পরিচালক, সিনেমার অধিকাংশ কলাকুশীলব প্রায় সবাই দক্ষিণের। কিন্তু, তাতে কী? বাহুবলির সত্যিই বাহুবল আছে। তার দাপটে ম্লান বাংলা ছবিও। অনেকে বলাবলি শুরু করেছেন সার্থক নাম বটে। বাহুবলি। গতকাল পশ্চিমবঙ্গের ১৯০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বাহুবলি।

একইদিনে স্ক্রিনে এসেছে দুর্গা সহায়ও। কদিন আগে মুক্তি পেয়েছিল জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ছবি বিসর্জন। কিন্তু, বাহুবলি টু’র মুক্তির পর দর্শকরা কার্যত ঝুঁকেছেন তার দিকেই। অরিন্দম শীল বা কৌশিক গাঙ্গুলি, দুজনেই প্রথম সারির পরিচালক। তাঁদের সিনেমা দেখতে হলে ভিড় উপচে পড়ে। আবার বিসর্জন সিনেমায় শেষবারের মতো সংগীত পরিচালকের কাজ করেছেন কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। ফলে, এই ছবিদুটি দেখতে মানুষ ভিড় করবে বলে আশা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু, সেই আশায় জল ঢালল বাহুবলি টু। যদিও আগে মুক্তি পাওয়ায় বিসর্জন কিছুটা হলেও সাফল্যের মুখ দেখেছে, বাণিজ্যিক ভাবে সফলও হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি।

কলকাতার সিনেমা হলগুলির দশা এখন ঠিক কেমন? কলকাতা শহরের হলগুলিতে মুক্তি পেয়েছে বাহুবলি, বিসর্জন ও দুর্গা সহায়। কোনও কোনও হলে বাহুবলির সঙ্গে দুটির যে কোনও একটি বাংলা সিনেমাকে রাখা হয়েছে। কিন্তু, সিংহভাগ দর্শক ছুটছেন বাহুবলি টু দেখতে। রাজামৌলি পরিচালিত এই ছবিটি দেখার জন্য টিকিট কাটার হিড়িক বা লাইন চোখে না পড়লেও শো টাইমে হল চত্বরে ভিড় একেবারে চোখে পড়ার মতো। আট থেকে আশি সবাইকে দেখা গেল বাহুবলির দর্শকের তালিকায়।

বাহুবলির দাপটে বাংলা ছবি যে মার খাবে তা নিয়ে আগে থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন কৌশিকবাবু। টুইটে এনিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, বাহুবলি টু যেভাবে প্রেক্ষাগৃহগুলি দখল করে নিচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। আঞ্চলিক ছবির নিরাপত্তার পক্ষে সওয়াল করে বাহুবলির কারণে বিসর্জন যে সংকটে পড়েছে তাও স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তার বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন অনেকে।

কিন্তু, ঠিক কী বলছেন বাঙালি দর্শকরা। সামনে এসেছে নানা মুনির নানা মত। এক দর্শক বললেন, বিসর্জন বা দুর্গা সহায়ের প্রশ্ন নয়, প্রশ্নটা বিনোদনের। বাহুবলি বেশি আনন্দ দেবে বলে তিনি মনে করেন। তাই তা দেখতে এসেছেন। সিনেমা দেখতে এসে এক যুবতি জানালেন, বাহুবলি টু দেখার জন্য অনেক আগে থেকে অনলাইনে টিকিট কেটে রেখেছিলেন। তাই আগে বাহুবলি পরে বিসর্জন ও দুর্গাসহায়। প্রায় একই সুর শোনা গেল অধিকাংশ দর্শকের মুখে। তবে বিসর্জন বা দুর্গা সহায়ও দেখতে আসছেন অনেকে। তাদের যুক্তি, বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতির সিনেমা তাদের কাছে প্রথমে। পরে অন্যকিছু। দুর্গা সহায় একটি বাঙালি পরিবারের ছবি। অন্যদিকে বিসর্জনে রয়েছে দুই বাংলার টাচ। ফলে দক্ষিণী নয়, বাংলা ছবিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

যদিও শুধু পশ্চিমবাংলা নয়। গোটা ভারতশজুড়ে দাপট দেখাচ্ছে বাহুবলি। প্রথমদিনেই সব রেকর্ড ভেঙে ১০০ কোটির ক্লাবে পৌঁছে গেছে সিনেমাটি। সিনেমা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরও অনেক রেকর্ডই ভেঙে দেবে বাহুবলি। এই যার দাপট তার থেকে পশ্চিমবঙ্গ রেহাই পাবে কী করে?
২ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে