শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:১০:১০

কেন বিক্রমের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অঙ্কুশ, কারণ জানালেন এতদিনে

কেন বিক্রমের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অঙ্কুশ, কারণ জানালেন এতদিনে

বিনোদন ডেস্ক:  কেন বিক্রমের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অঙ্কুশ, কারণ জানালেন এতদিনে।

►পুজো আসতে বেশি দেরি নেই। কী প্ল্যান এবারের পুজোয়?
পুজোর পর বন্ধুদের নিয়ে সিঙ্গাপুর বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে। ওরাই বারবার জোর করছিল, তাই রাজি হয়ে গেলাম।

►স্কুল-কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে যাচ্ছেন? নাকি ইন্ডাস্ট্রির...?
ইন্ডাস্ট্রিতে এত বছর কাটানোর পরেও আমার কাছে বন্ধু মানে ওই স্কুল-কলেজের বন্ধুরাই। যখন আমি কিছুই ছিলাম না, সেই সময় থেকে যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব— তাদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রেখে চলেছি। ওদের সঙ্গেই হাউসপার্টি করি। ইচ্ছে রয়েছে, পুজোর চারটে দিন শহরের বড় প্যান্ডেলগুলো অন্তত দেখে আসার। গাড়ি থেকে তো নামতে পারব না, তাই গাড়িতে বসেই প্যান্ডেল দেখতে হবে! পুজোর উদ্বোধনের আমন্ত্রণ থাকলে তো যষ্ঠীর আগেই সেগুলো দেখা হয়ে যাবে।

►সিঙ্গাপুর ট্রিপে কি ঐন্দ্রিলাও  যাচ্ছেন?
(লাজুক হেসে) হ্যাঁ, ওকে বাদ দিয়ে গেলে তো আমার ১২টা বাজিয়ে দেবে! পুজোর সময় পাঁচ-ছ’জনের বন্ধুদের গ্রুপটা আর ঐন্দ্রিলা— ওদের নিয়েই ঘুরব।

►অভিনেতা হওয়ার আগের পুজোর দিনগুলোকে মিস্‌ করেন?
খুব নস্টালজিক লাগে! সমস্যাটা কোথায় জানেন? আমি আগের জীবনটা থেকে বেরিয়ে এসেছি। আর পুজোটাও পেশাদারিত্বের মধ্যে চলে এসেছে। হয়তো কোনও পুজোয় গেস্ট অফ অনার হয়ে গেলাম। যার জন্য আমি পেমেন্টও নেব। এসবের চক্করে ছোটবেলার টেনশন-ফ্রি পুজোর আনন্দটা হাওয়া হয়ে গিয়েছে। তখন হয়তো র‌্যানডম কোনও বাড়ির কলিংবেল বাজিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম, অমুক আছে? ধরা পড়লেই এক দৌড়ে পালাতাম! মিস্‌ করি ওই দিনগুলোকে।

►আর পুজোর প্রেম?
প্রেম ব্যাপারটা দুর্গাপুজোর চেয়ে সরস্বতী পুজোয় বেশি। (দুষ্টু হেসে) আসলে ফেস্টিভ সিজনে ছেলেমেয়েরাও একটু খোলামেলা হতে ভালবাসে। অন্য সময় একটা মেয়ে যদি সপাটে প্রস্তাব নাকচ করে দেয়, দুর্গাপুজো বা সরস্বতী পুজোর সময় সেই মেয়েই হয়ত ‘যাহ্‌ অসভ্য’ বলে চলে যাবে! ছেলেদের কাছে ওটাই বাড়তি পাওনা। আমাদের যাদের উপর ক্রাশ ছিল, পুজোর সময় সেই মেয়েদের পাড়ার প্যান্ডেলে যেতাম। আশা করতাম, যদি একবার সেই মেয়েটিকে দেখতে পাই (হাসি)।

►ছোটবেলার ক্রাশ’রা তারকা হওয়ার পর আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে?
কারও নাম বলতে চাই না। যারা একটা সময় আমাকে ডিচ করেছিল, তারাই এখন আমার নম্বর জোগাড় করে ফোন করে। এমন মেয়েও রয়েছে, যে অন্য ছেলেকে পছন্দ করে আমার সঙ্গে ব্রেকআপ করেছিল। অনেকে আমার প্রতি জেলাসও ছিল। এখন মাঝেমধ্যে এই মানুষগুলোই আমাকে মেসেজ বা হোয়াট্‌সঅ্যাপ করে বলে, ‘তোর ছবি দেখছি, পোস্টার দেখছি। ভাল লাগছে’! আমিও তাদের রিপ্লাই করি। পুরনো কথা মনে রাখার কোনও মানে নেই।

►আপনার অভিনেতা হওয়াটা নাকি আপনার এক প্রাক্তনের পছন্দ ছিল না...?
এই রে, এটা কে বলল? তার ওই সিদ্ধান্তটাকে আমি রেসপেক্ট করি। শি ইজ হ্যাপিলি ম্যারেড নাউ। তবে জীবনের ওই সময়টায় দোটানায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে আমি তাকেও বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, অভিনয় ছাড়া আমার আর কোনও ট্যালেন্ট নেই! যেখানে আমি সুযোগ পেয়েছি, কেন সুযোগটা নেব না বলতে পারেন? আমার চেয়ে কত ট্যালেন্টেড ছেলেমেয়েরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু তারা সুযোগ পাচ্ছে না। আমাকে দেখে তারা হয়তো গালাগালিও করে। তাই সুযোগ ছাড়ার প্রশ্নই ছিল না।

►ঐন্দ্রিলার সঙ্গে আপনার নাকি জিমে আলাপ?
হ্যাঁ।

►প্রথমদিকে ঐন্দ্রিলার মা নাকি আপনাকে খুব একটা পছন্দ করতেন না।
(হাসি) শি ওয়াজ ভেরি প্রোটেক্টিভ অ্যাবাউট ঐন্দ্রিলা। সেটাই স্বাভাবিক।

শো’এর পেমেন্টের দরদামের সময় আপনি নাকি একবার এক অর্গানাইজারকে বলেছিলেন, ‘আমি মার্সিডিজ চড়ি। তাই এই টাকাটা আমি চাইতেই পারি’?
(অবাক হয়ে) কে বলল এটা? প্রথমেই বলি, ইভেন্ট অর্গানাইজারদের সঙ্গে আমি এভাবে মিশিই না। টাকায় না পোষালে সরাসরি বলি দিই, কিন্তু এভাবে কথা বলি না। তবে শো’য়ের জন্য কেউ নামমাত্র টাকা অফার করলে মাথা গরম হয়ে যায়। বিকজ দ্যাট আমাউন্ট ইনসাল্টস মি। এই অভিজ্ঞতা যে কোনও অভিনেতার সঙ্গেই হয়ে থাকে।

 বিক্রম (চট্টোপাধ্যায়) যে আপনার বেস্টফ্রেন্ড তা কারও অজানা নয়। শুধু ‘বন্ধুত্ব’এর খাতিরেই কি খারাপ সময়ে বিক্রমের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন?
কাছের কারও বিরুদ্ধে যদি একটার পর একটা যুক্তি দেখিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়, যে তার প্রতিটি পদক্ষেপই ভুল ছিল— চুপ থাকতে পারবেন? আমার ক্ষেত্রেও তাই। একটাই কথা বলব, বিক্রম ইজ আ জেনুইন পার্সন। অ্যান্ড আই জাস্ট লাভ হিম! ছ’বছর চিনি ওকে। এই কয়েক বছরে ও আমাকে এমন কোনও সুযোগ দেয়নি, যাতে আমি ওর বিরুদ্ধে যেতে পারি। ২৯ এপ্রিলের ঘটনার পর বিক্রম যাদের বিশ্বাস করত, তারাও দূরে সরে গিয়েছে। বিক্রম এখন জামিনে রয়েছে। আদালত নিশ্চয়ই ভাল বুঝেছে, সেই কারণেই জামিন দেওয়া হয়েছে।

বিক্রমকে সমর্থন করার জন্য আপনাকে তো সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে। অনেকের মনে হয়েছে, আপনাকে অভিনেতা হিসেবে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।
(হেসে) দর্শক ছাড়া কেউ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যাঁরা বলেছেন, তাঁদের পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি না। তবে তাঁদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি যেমন বিক্রমের পাশে দাঁড়িয়েছি, তাঁরা সোনিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি কিন্তু কাউকে আঘাত করতে চেয়ে বিক্রমের পাশে দাঁড়াইনি। সেই জন্য যদি কেউ আমার সম্পর্কে পাঁচ কথা বলে থাকে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।

►বিক্রম বন্ধুমহলে মন্তব্য করেছেন, যে নিজেও আশা করেননি আপনি এভাবে ওঁর পাশে দাঁড়াবেন।
আইন সকলের জন্য সমান। বলিউডেও তাঁর উদাহরণ রয়েছে। আমার এক বন্ধু কষ্ট পাচ্ছিল। মনে হয়েছিল, তার পাশে দাঁড়ানো দরকার, তাই করেছি।

►বন্ধুর পাশে দাঁড়ানো উচিত হচ্ছে না, অনেকেই নাকি সেই সময় আপনাকে এমন পরামর্শ দিয়েছিলেন?
এটা সত্যি। আমিও তাঁদের বুঝিয়েছিলাম। আইন আইনের পথে চলুক— এই কথাটা প্রথম দিন থেকে বলে আসছি। আদালত যখন বিষয়টা দেখছে, তাহলে আমরা কেন একে অপরের দিকে কাদা ছুঁড়ছি? আর বিপদে পড়েছে বলে যদি বন্ধুর বিরুদ্ধে কথা বলি, তাহলে আমার সঙ্গে তো কারও মেশাই উচিত নয় বস্! যাঁরা সোনিকার পাশে দাঁড়িয়ে ক্যাম্পেন চালিয়েছেন, তাঁরাও নিজেদের কাজ ফেলে রেখেই কাজগুলো করেছেন। আই রেসপেক্ট দেয়ার ফ্রেন্ডশিপ।

দুর্ঘটনার পর বিক্রমের সঙ্গে আপনি একাধিকবার কথা বলেছেন। সেই রাতে বিক্রম আদৌ মদ্যপান করেছিলেন কি না, সেই নিয়ে কোনও কথা হয়েছে?
বিশ্বাস করুন, আমি ওইদিকেই যাইনি। বাড়ি ফেরার পর আমি যথাসম্ভব ওকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেছিলাম। ওকে হাসানোর জন্য জোক্‌স বলেছি। ওই ঘটনা সম্পর্কে ওকে কিছু মনে করাতে চাই না, তাই এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন করিনি।

২৯ এপ্রিলের আগে যেভাবে ওর সঙ্গে মিশতাম, সেটাই ওকে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে ওর হাসি দেখে বুঝতে পারতাম, ওর উপর দিয়ে কী যাচ্ছে! সোনিকা তো বিক্রমের জীবনের খুব কাছের একজন ছিল। আগে যে জোক্‌সে ও গড়াগড়ি দিয়ে হাসত, এখন সেই জোক্‌সে ওর ঠোঁটের কোণে চিলতে হাসি। বুঝতে পারতাম ওর কষ্ট হচ্ছে। --এবেলা

এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে