রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০১:০৮:০০

যে কারণে আসিফের সাথে গান করেন না প্রীতম আহমেদ!

যে কারণে আসিফের সাথে গান করেন না প্রীতম আহমেদ!

বিনোদন ডেস্ক : আসিফ-প্রীতম এক সময়ে জনপ্রিয় হিট জুটি। প্রচুর হিট গান ছিল তাদের কিন্তু বর্তমানে বেশ কয়েক বছর হল তারা আর কাজ করেন না। কি সেই কারন? এমন প্রশ্নই ফেসবুক লাইভে প্রীতমকে করেছেন আসিফের বেশ কয়েকজন ভক্ত। তার জবাবে শুক্রবার প্রীতম আহমেদ যা বলেছেন, তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

২০০৫ সালে দেশে মঙ্গা চলছিলো, সেই সময় ধুম্মা চলে সুরে বাংলাদেশে প্রায় ২০/২৫ টি গান রিলিজ হয়েছিল। এর মধ্যে আসিফেরও একটা গানের সুর মিলে গিয়েছিলো যেটা আমি করিনি, অন্য কেউ করেছে। ওই সময় একটি দৈনিকে সাক্ষাৎকারে আমাকে বলা হল, সবাই ধুম্মা চলে টাইপ গান গাইছে আপনি কেন মঙ্গা নিয়ে গান করলেন? আপনি কি আবার জীবনে কমার্শিয়াল গানে ফেরত আসবেন? আমি বললাম যে না, এ ধরনের গান আমার পক্ষে গাওয়া সম্ভব না। দেশে একদিকে মানুষ মারা যাবে না খেয়ে আরেক দিকে আমি ক্লাবে ক্লাবে ধুম্মা চলে সুরে গান গাইব মেকাপ লাগিয়ে, এটা আমার পক্ষে সম্ভব না।

ইন্টারভিউটা রিলিজ হয়েছিলো, দ্বীন ইসলাম নামের একজন সাংবাদিক নিউজটা করেছিল। ইন্টারভিউটা রিলিজের পরের দিন আসিফ আমাকে ফোন দিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ করলেন আমি নাকি তাকে নিয়েই বলেছি এবং আমি তাকে উদ্দেশ্য করেই বলেছি।আসলে ইন্টারভিউয়ের ভেতরে তার কোন নাম ছিল না কারন ধুম্মা চলে সুরে তখন অসংখ্য গান বের হয়েছে শুধু একটা না আর আসিফের গান বের হয়েছে নাকি তখন আমি নিশ্চিত ছিলাম না।

পরবর্তীতে এটা নিয়ে সে সাউন্ডটেকে গিয়ে মালিক বাবুল সাহেবকে দিয়ে আমাকে ফোন দেয়ালো সাউন্ডটেকে যাওয়ার জন্য। আমি সাউন্ডটেকে যাইনি। তারপর দৈনিকটির সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দিয়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হল। ওই সময় তিনি সাউন্ডটেকে গিয়ে সাউন্ডটেকে আমার গাওয়া যত অ্যালবাম ছিল, সবগুলো অ্যালবাম সে অ্যালবামের রেক থেকে ফেলে দিয়েছিল। ওই সময় আমার হ্যালো বন্ধু অ্যালবাম বের হয়েছিল, সেই অ্যালবামের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছিলো এবং পত্রপত্রিকা থেকে শুরু করে সব জায়গায় আমার ইন্টারভিউ বন্ধ করে দিয়েছিলো।

চ্যানেল আইতে আমার সারেগামা নামের একটা প্রোগ্রাম চলতো সেটাও সাউন্ডটেকের প্রযোজনায়, সাউন্ডটেককে বলে সেখানকার প্রোগ্রাম সে বন্ধ করে দিয়েছিলো। আমাকে নানা ধরনের হুমকি ধামকি থেকে শুরু করে, আমার পরিবারের আমার স্ত্রীকেও নানা ধরনের কথা বলা হচ্ছিলো এবং পরবর্তীতে এই বিষয় নিয়ে এমনভাবে উনি আক্রমন করছিলো, আমার কিছু বন্ধু গীতিকার, সুরকার তারা সেটার প্রতিবাদ করেছিলো এবং তাদের সঙ্গেও সে অনেক খারাপ ব্যাবহার করেছিলো। যেমন শফিক তুহিন, আজমেরি বাবু, প্রদীপ সাহা তাদের সাথেও আমার এই বিষয় নিয়ে তর্ক হয়েছিলো যে, প্রীতম তো কিছু বলে নাই, তাকে নিয়ে কেন এত কথা বলা হচ্ছে।

যেহেতু তার গান আমি সব মন দিয়েই করতাম, ভালোবেসেই করতাম। আমার কোন গানই তার জন্য খারাপ করে করি নাই। তারপর ও সে আমার শিল্পী হিসেবে বাদই দিলাম, আমি তার গানের গীতিকার সুরকার সঙ্গীত পরিচালক ছিলাম। একটা গায়ক যখন একজন মিউজিক ডিরেক্টর এর সাথে এত বাজে ব্যাবহার করে এবং তার ক্যারিয়ারকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলার চেষ্টা করে ,তাকে নিয়ে আর কোনদিন নতুন গান বানানো যায় না। যে লোকটা একটা গীতিকার ,সুরকারকে সম্মান দিতে জানে না, তার জন্য গান করার কোন মানে নেই।

এদিকে গত শনিবার ফেসবুকে প্রীতম আহমেদ বলেন, ঘটনাটি আমাদের শিল্পী সমাজের জন্য লজ্জা জনক তাই এতদিন কোথাও বলতে ইচ্ছে করেনি। আজ লাইভে বার বার একই প্রশ্ন করায় বলতে বাধ্য হলাম। তাই এই সংবাদটি নিয়ে আমার তেমন কোন আগ্রহ নেই। আমার কথা, সুর সঙ্গীতে আসিফের গাওয়া গানের ভক্ত যারা তারা হয়তো তাদের এত বছরের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এই সংবাদে। সাউন্ডটেক বা চ্যানেল আই থেকে সরে আসা আমার কেরিয়ারের সাময়িক কিছু ক্ষতি করেছে ঠিকই কিন্তু আটকে রাখতে পারেনি। আমি চাইবো কোন সঙ্গীত শিল্পী বা সঙ্গীত পরিচালকের সাথে এমন আচরন করার সাহস যেন কোন গায়ক আর না পায়।  

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে