বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ০১:০২:২০

শ্রীদেবীর ‘২২০১’ রহস্যের সমাধান মিলেছে

শ্রীদেবীর ‘২২০১’ রহস্যের সমাধান মিলেছে

বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যু রহস্যের আপাত সমাধান মিলেছে। সমাপ্তি ঘটেছে তার মৃত্যু নিয়ে চলমান তদন্তের। দুবাইয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার রাতে জনপ্রিয় এ অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। দুবাইয়ে জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ারস হোটেল অ্যাপার্টমেন্টের ২২০১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন শ্রীদেবী। ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে, সেখানেই বাথটাবে ডুবে মারা যান তিনি। যদিও শুরুতে বলা হয়েছিল, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।

দুবাইয়ে শনিবার বিকালে ‘সারপ্রাইজ ভিজিটে’ যান শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অপ্রত্যাশিতভাবে শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর আসে। সোমবার তার মৃতদেহ ভারতে আনার জন্য দুবাই বিমানবন্দরে প্রস্তুত রাখা হয় ১৩ আসনের একটি জেট বিমান। কিন্তু ফরেনসিক রিপোর্ট সব এলোমেলো করে দেয়।

বলা হয়, হার্ট অ্যাটাকে নয়, দুর্ঘটনাবশত বাথটাবে ডুবে মারা গেছেন শ্রীদেবী। তার রক্তে অ্যালকোহলের উপস্থিতি পাওয়ার কথাও বলা হয়। এরপর তৈরি হয় নানা গুজব। দুবাই পুলিশ জিজ্ঞাসবাদ করে শ্রীদেবীর স্বামীসহ কয়েকজনকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সন্দেহ করার মতো কিছু পাওয়া যায়নি।

শ্রীদেবীকে হত্যা করা হয়েছে : শ্রীদেবীকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এমপি সুব্রামানিয়া স্বামী। তিনি এই মহান শিল্পীর মৃত্যুতে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, শ্রীদেবী তো কখনো ভারী পানীয় পান করতেন না। কিভাবে তার শরীরে এমন পানীয় এলো।

শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবরে ভারতজুড়ে লাখো কোটি ভক্তের হৃদয়ে যখন ক্ষরণ, তখন এমন মন্তব্য করেছেন সুব্রামানিয়া স্বামী। এ খবর দিয়েছে ভারতের ২৪ ঘণ্টার ইংরেজি খবরের টেলিভিশন চ্যানেল নিউজএক্স। এর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এসব কথা জানানো হয়েছে।

গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের স্থানীয় সময় রাত এগারটার দিকে হোটেলকক্ষে মারা যান শ্রীদেবী। প্রথমে বলা হয়, তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। কিন্তু পরে ফরেনসিক পরীক্ষায় বলা হয়, তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান নি। তার শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তিনি ওই রাতে যখন বাথটাবে গোসল করতে গিয়েছিলেন তখন অচেতন হয়ে পড়েন। সেখানেই পানিতে ডুবে মারা যান তিনি।

এ তথ্য ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার ডাইমেনশন পাল্টে যায়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দুবাই ছাড়তে বারণ করা হয়েছে শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুরকে। সোমবার শ্রীদেবীর মৃতদেহ ভারতে আনার কথা থাকলেও আকস্মিকভাবে তা বিলম্বিত করা হয়। তার মৃতদেহ দুবাইয়ের একটি মর্গে রাখা হয়েছে। আরো তদন্ত শেষে তা দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ঠিক এ মুহূর্তেই নিউজএক্স ওই খবর দিয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবরে সারা দেশে তার ভক্তরা ভেঙে পড়েছেন। তার বাড়িতে উপস্থিত হচ্ছেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান থেকে শুরু করে বড় বড় সব সহ-অভিনেতা। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন সুব্রামানিয়া স্বামী। তিনি বলেছেন, (দুবাইয়ের) প্রসিকিউশন কি বলে তার জন্য আমাদের অপেক্ষা করা উচিত। কিন্তু মিডিয়া তো চুপ করে থাকতে পারে না। তিনি (শ্রীদেবী) কখনো ভার পানীয় পান করতেন না। তাহলে কিভাবে তার শরীরে এটা প্রবেশ করলো? সিসিটিভির কি হয়েছিল?

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ে হয়তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। শ্রীদেবীর মেডিকেল রিপোর্টের বিষয়ে আরো অধিকতর প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রামানিয়া স্বামী। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকরা অকস্মাৎ মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হলেন এবং বললেন- তিনি (শ্রীদেবী) মারা গিয়েছেন হার্ট অ্যাটাকে। তাই তিনি নিজের মতামত তুলে ধরে বলেন, তিনি মনে করেন শ্রীদেবীকে হত্যা করা হয়েছে। বিজেপির প্রভাবশালী এই এমপি বলিউড ও আন্ডারওয়ার্ল্ড সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন।

ভারতীয় মিডিয়ার সমালোচনায় খালিজ টাইমস : ভারতীয় মিডিয়ার কড়া সমালোচনা করেছে খালিজ টাইমস। শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে দুবাইতে যখন তদন্ত চলছে, তখন ভারতীয় মিডিয়া তার মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করে ফেলছে বলে ওই সমালোচনা। এ বিষয়ে খালিজ টাইমস একটি ছোট্ট সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই সম্পাদকীয়কে বলা হয়েছে ‘ন্যানো এডিট’ বা ক্ষুদ্র সম্পাদকীয়।

এর শিরোনাম ‘ভারতীয় মিডিয়ার প্রতি, আমরা আপনাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি’। ভারতীয় মিডিয়ায় স্পর্শকাতর এ মৃত্যু নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে বা হচ্ছে। তাতে শ্রীদেবীর মৃত্যুর কারণ কি তাও বলে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। খালিজ টাইমস লিখেছে, ভারতীয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী আমাদেরকে শোকাহত করেছেন। কিন্তু ‘হোয়াই জাম্প টু কনক্লুশনস’?

অর্থাৎ কেন এর কারণ নিয়ে এত হুড়োহুড়ি? সেলিব্রেটি সংস্কৃতিতে, কর্তৃপক্ষ যখন তদন্ত করছে, কোনো চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়নি, তখন ভারতীয় মিডিয়ার কোনো কোনো মহল বিচারক হয়ে যেতে চায়। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছেন শিকড় থেকে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের। ফরেনসিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তার মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। ভারতীয় মিডিয়ার প্রতি আমাদের অনুরোধ- ধৈর্য ধরুন, বিশেষ করে এমন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে