বিনোদন ডেস্ক : মোদি সরকারের আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে ভারতরত্ন সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছেন ভূপেন হাজারিকার পরিবার। এই বিল ছিল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আগত সে দেশের উদ্বাস্তু সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদান।
এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে প্রখ্যাত গায়ক, সুরকার ও সাংবাদিক ভূপেন হাজারিকাকে মরনোত্তর ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন দেবার কথা ঘোষণা করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
সেই ঘোষণার প্রায় ১৫ দিন পরে ভূপেন হাজারিকার পরিবার জানিয়েছে, তারা ভারতরত্ন সম্মান গ্রহণ করবেন না। সোমবার রাতে আসামের একটি দৈনিকে ভূপেন হাজারিকার ছেলে তেজ হাজারিকা জানিয়েছেন, আমি আসামের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
সুধাকণ্ঠ ভূপেন হাজারিকা সবসময়ই আসামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং লড়াই আন্দোলন করেছেন। আমরা তাই এই সম্মান গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি। পুত্র হিসেবে আমি জানাচ্ছি, ভারত সরকার তাকে যে মরণোত্তর সম্মান প্রদান করতে চাইছে আমরা তা গ্রহণ করব না।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে আসামের মানুষ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। তারা এই বিলের প্রতিবাদে সর্বাত্ম আন্দোলন শুরু করেছেন। সেই আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও।
গতমাসেই ভূপেন হাজারিকার সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং রাজনীতিবিদ নানাজি দেশমুখকে ভারতরত্ন দেবার কথা ঘোষণা করা হয়। সেই সময় কিংবদন্তী গায়ক ভূপেন হাজারিকাকে এই সম্মান দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছিলেন।
টুইটে তিনি লেখেন, ভূপেন হাজারিকার গান ও সংগীত প্রজন্ম ধরে মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। বিশ্বের কাছে ভারতীয় সংগীতকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন তিনি। খুবই খুশি যে ভূপেন হাজারিকা ভারতরত্ন পাচ্ছেন।
অবশ্য এর আগে ১৯৭৭ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় ভূপেন হাজারিকাকে। ২০০১ সালে পদ্মবিভূষণ দেওয়া হয় তাকে। এছাড়া ২৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ আঞ্চলিক ছবি ‘চামেলি মেমসাহেব’-র সংগীতের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।
শ্রেষ্ঠ লোকসংগীত শিল্পী হিসেবেও অল ইন্ডিয়া ক্রিটিক অ্যাসোসিশেনের পুরস্কার পেয়েছিলেন। দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার, অসম সরকারের শংকরদেব পুরস্কার, জাপানে এশিয়া প্যাসিফিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা সংগীত পরিচালকের পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে তাকে।
তবে জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি আসামের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১১ সালে প্রয়াত হয়েছেন ভারতীয় সংগীতজগতের এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী।