বিনোদন ডেস্ক : তাহলে কি বলিউড সুপার স্টার সালমান খানকে জেলেই যেতে হচ্ছে? মুম্বাই পুলিশ অন্তত তেমনই চাচ্ছে।
এদিতে কিছুদিন আগে মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর দেশটির সরকার ও মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছিলো, সালমান খান মামলা নিয়ে তারা এবার সুপ্রিম কোর্টে যাবে।
এদিকে মুম্বাইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএমএম প্রসন্ন জানালেন, তারা একটি চার্জশিট পেশ করেছেন এই মামলা নিয়ে। সেই চার্জশিটে ১৬টি চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে পুলিশ। দাবি করা হচ্ছে, এই ১৬টি তথ্য খুঁটিয়ে দেখলেই জানা যাবে, সালমান খান নির্দোষ নন!
চার্জশিটে যেসমস্ত তথ্য রয়েছে তা নিন্মরূপঃ-
১। চার্জশিটে স্পষ্ট ভাবে বলছে মুম্বাই পুলিশ, সালমান খান দুর্ঘটনার রাতে মদ্যপান করে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সান্তাক্রুজের রেন বার থেকে মদ্যপান করেছিলেন তিনি। সেই বিল জোগাড় করা হয়েছিল। কিন্তু, আদালতে আসেনি!
২। জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলের রেন বার-এ যে সালমান ছিলেন, তার প্রমাণ হিসেবে হোটেলের বিল এবং পার্কিং লটের ট্যাগ জোগাড় করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটাও আদালতে দেখানো হয়নি।
৩। কম্পিউটারাইজড্ বিল ছাড়াও রেন বারের একটা হাতে লেখা বিলও ছিল। সেটাও আদালতকে পেশ করা হয়নি।
৪। ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০০২-এর সকাল থেকেই সালমান ছিলেন বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে। অথচ, বিকেল বেলায় জেজে হাসপাতালে তাকে রক্ত পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এতটা দেরিতে রক্তে মাদক রয়েছে কি না, তার সঠিক প্রমাণ পাওয়া সম্ভব নয় বলে পুলিশের দাবি।
৫। নুর-উল্লাহ, পথ দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির রক্ত সংগৃহীত হয়েছিল ভাবা হাসপাতালে। অথচ, সালমান খানকে কেন নিয়ে যাওয়া হল জেজে হাসপাতালে, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই!
৬। জেজে হাসপাতাল থেকে বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে পরীক্ষার জন্য রক্ত এসে পৌঁছিয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর৷ অথচ, সেই রক্ত পরীক্ষার জন্য ল্যাবে যায় ৩০ সেপ্টেম্বর।
৭। এই দু’ দিনে রক্ত সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই দাবি মুম্বাই পুলিশের। ফলে, পরীক্ষায় পাওয়া তথ্যও সঠিক হতে পারে না।
৮। যে কনস্টেবল হাসপাতাল থেকে রক্ত নিয়ে পুলিশ স্টেশনে এসেছিল, তার কোনও বয়ান নেওয়া হয়নি। হলেও, সেটা নথিভুক্ত নয়। ফলে, সেই প্রমাণ যথেষ্ট নয়।
৯। সালমান খানের শরীর থেকে পরীক্ষার জন্য ৬ মিলিলিটার রক্ত নেওয়া হয়েছিল। অথচ, জমা পড়েছিল মাত্র ৪ মিলিলিটার।
১০। যে ব্যক্তি ওই রক্ত সংগ্রহ করেছিলেন, তারও বয়ান নেওয়া হয়নি।
১১। তদন্তকারী অফিসাররা রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নেওয়ার সময় সেগুলো খুঁটিয়ে দেখেননি। অথচ, সেই রিপোর্টে নানা অসঙ্গতির কথা রয়েছে।
১২। সংবিধানের ৬৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী বম্বে প্রহিবিশন অ্যাক্ট তৈরিই হয়নি এই মামলায়! হলে, ন্যায় বিচারের সম্ভাবনা থাকত!
১৩। দু জায়গায় এফআইআর দায়ের করা হয়৷ কেন, তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি!
১৪। সংবিধানের ১৬১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ নথিভুক্ত করা হয়নি। এরকম কাউকে পাওয়াই যাচ্ছে না, যারা বলেছেন সালমনা গাড়ি চালাচ্ছিলেন না!
১৫। ডিফেন্সের দাবি মাফিক গাড়ির চাকা ভাঙা ছিল। ধাক্কা খাওয়াতেই চাকা ভেঙে যায়। কিন্তু, ওই চাকা ঠিক কীভাবে ভাঙল, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি!
১৬। কমল খান, যিনি ওই দিন সলমনের সঙ্গে ছিলেন, তাকে একবারের জন্যও আদালতে ডাকা হয়নি। অথচ, তার ঠিকানা পাওয়া গিয়েছিল। কমল খানকে আদালতে নিয়ে আসা না হলে, তার বয়ান না নিলে মামলা অসম্পূর্ণ থেকে যায়, দাবি মুম্বই পুলিশের!
এই সব সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে এবার নতুন করে খুলতে চলেছে সালমান-মামলা! এর আগে সালমান খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টেও লড়াই চালাবেন! এবার, এই চার্জশিট নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি তিনি!
১২ জানুয়ারি, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন