বিনোদন ডেস্ক : বিয়ের পরে সালমান মুক্তাদিরের আনন্দময় সময় কিভাবে কেটে যাচ্ছে, সেটা তিনি নিজেও টের পাচ্ছেন না। ১২ দিন কেটে গেছে, অথচ সালমানের মনে হচ্ছে মাত্র ৩ দিন কেটেছে। এমনটাই জানালেন আলোচিত এই মডেল ও অভিনেতা। যদিও সালমানের যাত্রাটা শুরু হয়েছিল ইউটিউবার হিসেবে কিন্তু এখন তার নামের পূর্বে আলোচিত সমালোচিত নানা বিশেষণ যুক্ত হয়েছে।
বিয়ের পরে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সামনে কথা বললেন সালমান মুক্তাদির। সবার সামনেই স্ত্রীর গালে ভালোবেসে এঁকে দিলেন চুম্বন চিহ্ন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ের পরে প্রথমবার হাজির হয়েছিলেন রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের একটি হলিউড সিনেমার প্রিমিয়ার শোতে। সেখানেই সালমান কথা বললেন প্রেস-এর সঙ্গে।
সালমান বলছিলেন, ‘কিভাবে সময় কেটে যাচ্ছে আমি টের পাচ্ছি না। ভেবেছিলাম তিনদিন কেটে গেছে। কিন্তু দিশা বলছে ১২ দিন কেটে গেছে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম তিনদিন না? সে বললো না, ১২ দিন। এমনিতে একটি দিনে ২৪ ঘণ্টা আমার কাছে যথেষ্ট মনে হতো না। বিয়ের পর মনে হচ্ছে দিনটা আরো ছোট হয়ে গেছে।’
বিয়ের পরে অনেক ভালো সময় কাটছে জানালেন স্ত্রী দিশা। বললেন, ‘সে অনেক কেয়ারিং, অনেক খেয়াল রাখে। বাসায় বাচ্চাদের সঙ্গে অনেক মজা করে, আনন্দ করে। আমি এটা খুবই ভালোবাসি।’
মধুচন্দ্রিমায় কোথায় যাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান বললেন, ‘বিয়ের ঘোর থেকেই এখনো বের হতে পারিনি, তাই হানিমুনে কোথায় যাব, না যাব সে বিষয়ে আলোচনাতেই আমরা যাইনি। সবকিছু ঠিক করতে সময় লাগবে। বিশেষ করে সবকিছু ছেড়ে এসেছে। অনেক যুদ্ধ করে আমাদের বিয়েটা হয়েছে। এখনো বাসা-ই গোছানো হয়নি। সো হানিমুন বাসা গোছানোর পরে।’
বিয়ের পূর্বে কী ধরনের যুদ্ধ, কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি সালমান। বিষয়টি নিজেই জানালেন তিনি। বললেন, ‘আসলে আমাকে যে যুদ্ধ করতে হয়েছে বিষয়টা তেমন না, ওকেই (দিশা) বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে। পূর্বে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারতো না। আমিও কনফিউশনে ছিলাম। আমার অতীত নিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতার একটা বিষয় ছিল। তাই আমিও বুঝতেছিলাম না প্ল্যানটা কী? শেষমেষ প্ল্যান হলো, সবকিছু ছেড়েছুড়ে সে আমার কাছে চলে আসবে।’
এই বিয়েতে কী কী ছাড়তে হয়েছিল সালমান মুক্তাদির ও দিশাকে? সালমানকে তেমন কিছুই ছাড়তে হয়নি শুধু অতীতের বিষয়গুলো । সালমান বলেন, ‘কিন্তু ওকে সব ছাড়তে হয়েছে। বেসিক্যালি যুদ্ধটা ও করেছে। ওর লাইফে এমন কিছু নেই যে ও ছেড়ে আসেনি। শুধু আমি কেন কেউই ওকে প্রোপার ট্রিটমেন্ট দেওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তারপরেও সব কিছু ছেড়ে আসছে, এটার সঙ্গে কোনোকিছুরই তুলনা হয় না।’
পূর্বের সম্পর্ক নিয়ে বলেন, ‘আসলে আমি এমন এক ছেলে যার জন্য মেয়ে পাওয়া খুব একটা কঠিন কিছু হতো না। আর শুধু রিলেশনশিপে যেতেও ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু পূর্বে যাদের সঙ্গে রিলেশন ছিল তারা কেউই বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল না, হয়তো হাইপের জন্য এসেছে। আমি ভেবেছি যদি লয়াল থাকতে হয় তাহলে বিয়ের মতোই সম্পর্ক দরকার। তাই বিয়েটা করেছি।’
দিশাকেই কেন বিয়ে করেছেন সালমান এই প্রশ্নের জবাবে আসল কারণ হিসেবে সালমান বলেন, ‘ভালোবাসাটা আসলেই দুর্লভ। কারণ মানুষ ভালোবাসার নাম দিয়ে যেসব চায়, ওসব পেলেই ফুরায় যায়। আসলে ভালোবাসাটা যাকে বলে সেটা অফুরন্ত ছিল আমার কাছে। সেটা অনেক পেয়েছি। কিন্তু এই মেয়েটার মধ্যে এমন কিছু না কিছু অবশ্যই আছে, যার ফলে আমি তাঁকে বিয়ে করেছি। কারণ আমার ওই ভয়টা লাগেনি যে আমার আরো দরকার। পৃথিবীতে একটা মাত্র মানুষ যে আমাকে স্বার্থহীনভাবে ভালোবেসেছে সে দিশা।’
সালমান বলেন, ‘আমি ভালোবাসাটা আর কেউ দিতে পারতও না এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিওর। ওই ফূর্তি আমোদ ওটার জন্য আমি এটা স্যাক্রিফাইস করতাম না। আমাকে বিয়ে করে এতো নেগেটিভিটিতে কোনো মেয়ে টিকতে পারতো না, সহ্যই করতে পারতো না। একমাত্র দিশাই এটা পেরেছে। বিয়ের অজস্র বাজে কথা শুনেও ও স্বাভাবিক থেকেছে। তাই আমি মনে করি পৃথিবীতে দিশার চেয়ে বেটার কেউ হতে পারে না। পারবেও না।’