বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২১:০৭

আমি বিএনপির কর্মী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে পথ চলি: বেবী নাজনীন

আমি বিএনপির কর্মী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে পথ চলি: বেবী নাজনীন

বিনোদন ডেস্ক : রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে বিগত সরকারের আমলে পেশাগত কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীনের। পরবর্তী সময়ে তিনি থিতু হন যুক্তরাষ্ট্রে। অবশেষে রবিবার (১০ নভেম্বর) দীর্ঘ আট বছর পর দেশে ফিরেছেন কোকিলকণ্ঠী বেবী নাজনীন। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টাও। গান ও রাজনীতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ

এত দিন পর দেশে ফিরে কেমন লাগছে?
সত্যি বলতে, তৃপ্তি পেয়েছি। ঢাকায় পা রাখার পর মনে হয়েছে, সত্যিকারের স্বাধীনতা পেলাম। একজন মানুষকে বিনা কারণে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন রেখে যখন দেশের বাইরে থাকতে হয়, তার চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও ফিরতে পারিনি এত দিন।

এ বছরই আমার মা না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার পরও দেশে ফিরতে পারিনি। সন্তান হিসেবে এর চেয়ে অসহায়ত্বের আর কী হতে পারে? এখন মনে হচ্ছে মুক্তি পেয়েছি। মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়াতে পারছি।

এই অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। তাঁদের কার্যক্রম কেমন দেখছেন? কোনো পরামর্শ আছে এই সরকারের প্রতি?

মাত্র তিন মাস হলো তাঁদের। এখনই কিছু বলতে চাই না। একটাই চাওয়া—যে কথা বলার স্বাধীনতা, যে সংস্কারের স্বপ্ন তাঁরা দেখিয়েছেন, সেটা যেন বাস্তবায়ন করেন।

জাতীয় নির্বাচনের কথাটাও তাঁদের মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা যাবে না। মনে রাখতে হবে, এটা জাতীয়তাবাদীর দেশ, গণতন্ত্রের দেশ। বিগত সরকার যে ভুল করেছে সেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে অবশ্যই ভালো কিছু করবে তাঁরা, এটাই আমার আশা।
রাজনীতির কারণে দীর্ঘদিন গান থেকে দূরে ছিলেন। গান মিস করেননি?

বিদেশে আমি কিন্তু গানের সঙ্গেই ছিলাম। আমেরিকা, ইউরোপে বড় বড় কনসার্ট করেছি। সেখানে কেউ আমাকে গান করতে বাধা দেননি। তবে হ্যাঁ, দেশে থাকলে হয়তো নতুন অনেক গান করতে পারতাম, সেটা হয়নি। বাংলাদেশের শ্রোতারা বঞ্চিত হয়েছেন আমার গান থেকে। বিদেশে থেকে আমি দলীয় কার্যক্রমও পরিচালনা করেছি। বলতে গেলে, সব সময় কাজের মধ্যেই থাকতাম। যার কারণে গান অতটা মিস করিনি।

বিদেশবিভুঁইয়ে গত ৮ বছরে কিভাবে সময় কেটেছে আপনার?
দেশের কথা তো মনে পড়েছেই। মা অসুস্থ ছিলেন, রাজনৈতিক সহকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নও আমাকে কষ্ট দিয়েছে। তবে এটাকে শক্তি হিসেবে নিয়েছি। গত আট বছরে বিদেশে আমার কার্যক্রম দেখলে বুঝতে পারবেন, বসে ছিলাম না। দলের জন্য প্রতিদিন কিছু না কিছু করেছি। যখন যে দেশে গিয়েছি, হোক সেটা যুক্তরাজ্য, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র—দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি।

বিএনপির দুঃসময়ে আপনি ছিলেন লড়াকু সৈনিক। দলটির কাছে নিশ্চয়ই অনেক আশা আপনার?
আমি বিএনপির কর্মী। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে পথ চলি। এটাই আমার কাছে অনেক। বিএনপির দুঃসময়ে যেমন লড়াকু অবস্থায় রাজপথে ছিলাম, সুসময়েও আমাকে পাবেন। আমি কিছু পাওয়ার আশায় দলটিকে সমর্থন করি না। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার মনে হয়েছে, একমাত্র বিএনপিই মানুষের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, মানুষের অধিকারে বিশ্বাসী। দল আমার জন্য যেটা নির্ধারণ করবে সেটাই মেনে নেব।

জাতীয় নির্বাচনে এবারও নিশ্চয়ই বিএনপির টিকিটে ভোটের লড়াইয়ে নামবেন?
জানি না এখনো। দল চাইলে অবশ্যই নির্বাচন করব। মানুষের সেবা করার মতো আনন্দ তো আর কিছুতে নেই। দলের যেকোনো সিদ্ধান্তের জন্য আমি প্রস্তুত।

নতুন গানে ফিরবেন কবে থেকে?
আমি যে স্ট্যান্ডার্ড মেইটেন করি, সে রকম গান পেলে গাইতে সমস্যা নেই। গত আট বছরে আমার অনেক গান তৈরি হয়েই আছে। দেশে না থাকার কারণে সেগুলোতে কণ্ঠ দিইনি। এবার তো দেশে ফিরলাম। দেখি ধীরে ধীরে গানগুলো কণ্ঠে তুলব, একের পর এক প্রকাশও করব।

আপনার চোখে আগামীর বাংলাদেশ কেমন?
আমরা বলি না, স্বপ্নের বাংলাদেশ! এবার সেই স্বপ্নের বাংলাদেশকে বাস্তবে দেখতে চাই। যে দেশে থাকবে না কোনো হানাহানি, থাকবে না হাহাকার। একে অন্যের ভালো-মন্দে পাশে থাকবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাবে। সংবিধানের বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে প্রতিটি সেক্টরে। ঘরে ঘরে বেকার থাকবে না, থাকবে না কোনো বৈষম্য। এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমার বিশ্বাস, এই স্বপ্ন সত্যি হবেই।-কালের কণ্ঠ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে