বিনোদন ডেস্ক : এই প্রথম জিৎ অভিনয় করেছেন রাজীবকুমারের পরিচালনায়। আর এই প্রথম জিৎ কে পর্দায় দেখা যাবে দ্বৈত চরিত্রে। ছবির নাম ‘পাওয়ার’। ছবিতে জিতের বিপরীতে আছেন দুই নায়িকা—নুসরত জাহান ও সায়ন্তিকা। তবে জিতের বৈশাখি অফারে সত্যি আনন্দিত হবেন ভক্তরা। পরিচালক রাজীবকুমার জানালেন, ‘প্রথমবার কাজ করলাম জিতের সঙ্গে। আগে থেকেই জানতাম জিতের মধ্যে সুপার হিরো মেটেরিয়াল আছে। তবে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে হাতে কলমে সেই অভিজ্ঞতা হল।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমবার আমার কোনো ছবির কেন্দ্রিয় চরিত্রে আছে একজন পুলিস অফিসার। এই ছবি যেমন অ্যাকশন প্যাকড তেমনই আছে প্রেমও। তবে এ ছবি কোনো দক্ষিণী ছবির রিমেক নয়। অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে ছবিরটির চিত্রনাট্য লিখেছি আমি নিজেই।’
২০০২ সালে হরনাথ চক্রবর্তীর ‘সাথী’ ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন জিৎ। সেখান থেকে ‘যুদ্ধ’, ‘হিরো’, ‘সাথীহারা’, ‘ওয়ান্টেড’ হয়ে ‘বেশ করেছি প্রেম করেছি’— জিৎ বরাবরই বেছে নিয়েছেন মূলধারার বাণিজ্যিক বাংলা ছবি। এর মধ্যে ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ ছিল একমাত্র ব্যতিক্রম। এমনকি, প্রসেনজিৎ যখন অন্যধারার ছবিতে নিজের অভিনীত চরিত্র নিয়ে একের পর এক সফল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চলেছেন, দেব যখন মূলধারার ছবির পাশাপাশি ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘বুনো হাঁস’ বা ‘আরশিনগর’-এর মতো ছবিতেও অভিনয় করছেন, সেই সময়ে বাণিজ্যিক ফর্মুলার ছবিকেই এখনো পর্যন্ত আঁকড়ে রেখেছেন জিৎ। এমনকি, তার এই নতুন ছবি ’পাওয়ার’ও ব্যতিক্রম নয়।
জিতের কথায়, ‘বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ) তার ক্যারিয়ারের যে জায়গায় পৌঁছে গেছেন, সে জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি অন্যরকম ভাবনা ভাবতেই পারেন। আমি এখনো সেই জায়গায় পৌঁছইনি। আর দেবের সিদ্ধান্ত দেবের নিজস্ব। সেখানে আমার কিছু বলারও নেই। আমি শুধু চাই, যতদিন সম্ভব আপনাদের মতে এই বাণিজ্যিক ছবিগুলোয় অভিনয় করে নিতে চাই। নিজের অ্যাকশন হিরো বা লাভার বয় ইমেজটা কেই বা নষ্ট করতে চায় বলেন!’
তিনি বললেন, ‘তবে লক্ষ্য করবেন কোনো সময়েই আমি একই রকম চরিত্রকে দুবার রিপিট করি না। আমার এই নতুন ছবিতেও (পাওয়ার) বেশ অন্যরকম একটা চরিত্রে অভিনয় করেছি আমি। একইসঙ্গে একজন দূর্নীতিগ্রস্ত পুলিস অফিসার এবং একজন সৎ পুলিস অফিসার হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখা যুবকের ভূমিকায়। এর বেশি আর কিছু বলছি না, বলা উচিতও নয়।’ পাশাপাশি এটাও বললেন, ‘যে দর্শক আমাকে আজকের জিৎ বানিয়েছেন, তাদের প্রতি একজন অভিনেতা হিসেবে আমার একটা দায়বোধ থেকেই যায়। কাজেই যতদিন এই ধরনের ছবিতে লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাবো করে যাবো।’
ছবির পরিচালক রাজীবকুমার যতই দাবি করুন না কেন এই ছবি কোনো দক্ষিণী ছবি অনুপ্রাণিত নয়, সে বিষয়ে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়। কারণ, যতটুকু গল্পসূত্র পাওয়া গেছে এই ছবির, তার সঙ্গে বেশ মিল ২০১৪ তে মুক্তি পাওয়া তেলুগু ছবি ‘পাওয়ার’-এর। কে এস রবীন্দ্রর পরিচালনায় সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রবি তেজা, হংসিকা মোটওয়ানি ও রেজিনা কাসান্দ্রা।
ছবির গল্পের কেন্দ্রে আছে দুই শহরের দুটি চরিত্র। একজন দূর্নীতিগ্রস্ত পুলিস অফিসার, যে একজন মাফিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যায় এবং এক যুবক, যে এই পুলিস অফিসারের মতোই দেখতে এবং পুলিস হয়ে ওঠার বাসনায় তার ইন্সপেক্টর বোনের জামাইকে নানা অ্যাকশনে সাহায্য করে। পুলিস অফিসারটি মারা যাওয়ার পর সরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই যুবককে কাজে লাগায় ওই মাফিয়াকে ধরার জন্য।
কিন্তু ওই মন্ত্রীর আসল উদ্দেশ্য কি ছিল? পুলিস অফিসারটি দূর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠল কেন? ওই যুবকই বা কিভাবে ওই মারা যাওয়া পুলিস অফিসারের স্বপ্ন পূরণ করল? তাই নিয়েই এই ছবি। তবে বেশ কিছু ট্যুইস্ট আছে ছবির গল্প জুড়ে যা মাঝে মাঝেই দর্শকদের গল্পের নতুন বাঁকে পৌঁছে দেবে। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই ছবির প্রথম ঝলক। শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মস ও সুরিন্দার ফিল্মস প্রযোজিত ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ১ বৈশাখ।
১৮ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই