ঢাকা: বর্তমানে বিশ্বে জনসংখ্যার বার্ধক্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ-যা ধীর গতিতে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবীণের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমন তাঁদের প্রতি অবহেলা ও অপব্যবহারের সংখ্যাও সারা বিশ্বে উদ্বেগজনকহারে বেড়েই চলেছে। প্রবীণরা শারিরীক, মানসিক, সামাজিক, আর্থিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন দ্বারা অবহেলা এবং অপব্যবহারের শিকার হচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার প্রবীণদের সমস্যা সম্পর্কে গণসচেতনতা আয়োজন লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত জেরোন্টোলজি ও জেরিয়াট্রিক ওয়েলফেয়ার মাস্টার্স প্রোগ্রাম সকাল ৯.৩০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানব বন্ধন করেন ও সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান, সেমিনার প্রযুক্তি নির্ভর এই সমাজ ব্যবস্থায় দিন দিন বাড়ছে নবীণ ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে মানসিক দূরত্ব।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ যা মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ এবং এ সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শিশু বৃদ্ধির হারের চেয়ে অনেক গুণ বেশী। ফলে, অচিরেই প্রবীণদের মোট সংখ্যা শিশু জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশে প্রবীণরাই জনসংখ্যার একটি বড় অংশ হয়ে পড়বে। শুধুমাত্র সংখ্যায় তাঁরা দ্রুত বাড়ছে তা’ই নয়; তাঁদের অধিকারগত প্রয়োজন মেটানোর মতো পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রিক সমতা ক্রমেই গভীর সংকট এবং তীব্র চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। বার্ধক্য বাংলাদেশের জন্যে এক ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
দারিদ্র্য ও নির্ভরশীলতার অন্যতম শিকার হচ্ছে প্রবীণ জনগোষ্ঠী। অধিকাংশ প্রবীণদের উপার্জন, কর্মসংস্থান তথা ক্রয়ক্ষমতা থাকে খুবই সামান্য। আর এর আঘাত সর্বাগ্রে পড়ে প্রবীণের জীবনযাপনে। ফলে প্রবীণদেরকে ছেলেমেয়েদের মুখাপেক্ষী হতে হয়। আবার অনেকেই তার নিজস্ব সম্পত্তি মৃত্যুর পূর্বেই ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে সম্পূর্ণ নিঃস্ব এবং পরমুখাপেক্ষী হয়ে যান। ফলে চিকিৎসাসহ বহুবিধ মৌলিক সেবা হতে প্রবীণরা বঞ্চিত হয়।
০৮ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/সবুজ/এসএ