রফিকুল ইসলাম রনি : ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর এবং দক্ষিণের থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তত্পরতা শুরু হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। দলের দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর এ বছরের ১০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর আওয়ামী লীগকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত করে কমিটি ঘোষণা করেন। তখন কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।
একই দিনে ৪৯টি থানা ও ১০৩টি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পাঁচ মাস পর ১১ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগরের কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ও লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া করেন। পরে দলীয় সভানেত্রীর অনুমোদন নিয়ে তা প্রকাশ করা হয়। থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও এ দুই নেতা দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর অনেকটা দলীয় পরিচয়হীন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় নেতারা। এ কারণে অনেক জনপ্রিয় নেতা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। তারা দলের চেয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেই বেশি সময় দিচ্ছেন। ফলে দলের গতিশীল করার পাশাপাশি আগামী বছরের শুরুতে বিএনপির সম্ভাব্য আন্দোলনের বিষয়টি সামনে রেখে কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছেন দলীয় নেতারা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে খসড়া তালিকা প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিতর্কিতদের খসড়া তালিকায় না রাখার দিকনির্দেশনা আছে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাতে মরক্কো থেকে দেশে ফেরার পর মহানগরের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে দেখা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করবেন। দুই মহানগর, থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদকরা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাবেন। তারা সেখান থেকে ফিরেই পুরোদমে কাজ শুরু করবেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, ‘দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই আমরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের অনুমতি চাইব।’ তিনি জানান, ওয়ান-ইলেভেনের সময় নেতাদের ভূমিকা বিবেচনায় নিয়ে খসড়া করতে থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, ‘আমরা ভিতরে ভিতরে কমিটি গঠনের কাজ এগিয়ে রাখছি। নেত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই পুরোদমে কাজ শুরু করব।’ তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিতর্কিত ও হাইব্রিডদের রাখা হবে না। ত্যাগী ও জনপ্রিয়দেরই মূল্যায়ন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশিকুর রহমান চৌধুরী লাভলু বলেন, ‘কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আমরা ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু করেছি। অতীতে কারা আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন, ওয়ান-ইলেভেনে কার কী ভূমিকা ছিল সেগুলো আমরা ভালো করেই জানি।’
শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, ‘ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের সমন্বয়ক ড. আবদুর রাজ্জাক সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেছেন। আমরা কাজ শুরু করেছি। নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা নিচ্ছি। যাচাই-বাছাই করে মহানগরের শীর্ষ নেতাদের কাছে তা জমা দেব।’ বিডি প্রতিদিন
১৬ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি