সোমবার, ২২ মে, ২০১৭, ০৩:২৩:১৬

আপন জুয়েলার্সের গ্রাহকদের স্বর্ণ ফেরত স্থগিত

আপন জুয়েলার্সের গ্রাহকদের স্বর্ণ ফেরত স্থগিত

নিউজ ডেস্ক: আপন জুয়েলার্স থেকে জব্দ করা সোনা ও ডায়মন্ড প্রকৃত গ্রাহকদের সোমবার ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, সোমবার গ্রাহকদের জব্দ করা সোনা ও ডায়মন্ড এর একটি তালিকা শুল্ক গোয়েন্দার কাছে জমা দেবার কথা ছিল আপন জুয়েলার্সের। কিন্তু রোববার তাদের পক্ষ থেকে কোনো বৈধ কাগজপত্র আর তালিকা দেখাতি পারেনি আপন জুয়েলার্স। সে কারণে গ্রাহকদের সোনা ও ডায়মন্ড সোমবার ফেরত দেয়া হচ্ছে না।

তিনি আরো জানান,  ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসছে ২৫ মে আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষকে নিজেদের দোকানে উপস্থিত হয়ে সোনা ও ডায়মন্ডের গ্রাহকদের তালিকা দেখাতে পুনরায় সময় দেয়া হয়েছে। সেই কাগজপত্র অনুযায়ী তালিকা তৈরির পর জব্দ করা সোনা ও ডায়মন্ড প্রকৃত গ্রাহকদের ফেরত দেয়ার জন্য আবার সময় নির্ধারণ করা হবে।

এর আগে, গেলো ১৮ মে শুল্ক গোয়েন্দা দল উপস্থিত হলেও আপন জুয়েলার্সের মালিকদের কেউ সেদিন দোকানে হাজির হননি বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তাই আসছে ২৩ মে আপন জুয়েলার্সের সব মালিককে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করবে শুল্ক গোয়েন্দা। আর ২২ মে শোরুম গ্রাহকদের সোনা ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

এদিকে কার্যালয় থেকে বের হয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ বলেন, ৪০ বছর ধরে সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। কোনো অবৈধ জিনিস আমাদের দোকানে নেই। শুল্ক গোয়েন্দার অধিকার রয়েছে আমাদের দোকান অনুসন্ধানের। তারা আমাদের সোনা ও ডায়মন্ড জব্দ করেছেন। আমরা কাগজপত্র উপস্থাপন করবো। আমরা ভ্যাট দিয়ে থাকি ট্যাক্স দিয়ে থাকি। তাই ১৫ দিন সময় চেয়েছি। পাশাপাশি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

সোনা আমদানি নিয়ে দিলদার বলেন, গেলো ৫ বছর ধরে আমদানি নেই। রিসাইকেলিং করে সোনা বানানো হয়। আমি যেভাবে ব্যবসা করি সারা বাংলাদেশের সোনা ব্যবসায়ীরা একইভাবে করেন। ব্যক্তিগতভাবে আপন জুয়েলার্স বন্ধ করা হলে সারা বাংলাদেশের জুয়েলার্স বন্ধ করতে হবে।

এর আগে বুধবার বেলা ১১টায় নোটিশের জবাব দিতে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত কার্যালয়ে আসেন আপন জুলেলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ও তার ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ।

গাড়ি থেকে নেমে সোজা আইডিইবি ভবনের ১০ তলায় চলে যান। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শো-রুমে ‘অবৈধভাবে’স্বর্ণ ও ডায়মন্ড মজুদ রাখার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতেই তারা শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে হাজির হন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর কবীর।

এর আগে গেলো রোববার ও সোমবার ঢাকার গুলশান, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ারের আপন জুয়েলার্সের ৫টি বিক্রয়কেন্দ্রে ‘অবৈধভাবে’মজুদ রাখার দায়ে ৪৯৭ কেজি স্বর্ণ ও ৪৩০ গ্রাম ডায়মন্ড জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা।

পরে এসব স্বর্ণ ও ডায়মন্ড মজুদের বিষয়ে জানতে বুধবার সকালে দিলদার আহমেদসহ জুয়েলার্সের সব মালিককে তলব করেন শুল্ক গোয়েন্দারা।

বনানীর নির্যাতন ঘটনায় প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে। ওই ঘটনার পর থেকে আপন জুয়েলার্সে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ বনানীতে দুই তরুণী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি। গেলো ২৮ মার্চ রেইনট্রি হোটেলে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে দুই তরুণী জানান, গেলো ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেয়া হয়। সেখানে নির্যাতনের শিকার হন তারা।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে