মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল : ‘অ্যাই, তুই আমার সঙ্গে যাবি, তোকে খেলনা কিনে দেব। ‘না, যামু না আমার খেলনা আছে।’ ‘আরে চল না, তোরে বাসায় নিয়ে মজার চকলেট, আইসক্রিম, মাছ-মাংস খেতে দেব। তুই এখানে থাকলে গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ব্যথা পাবি। চল, আমার সঙ্গে চল।’
না, যামু না, মাইরে ছাইড়া কোনোহানে যামু না।’সোমবার বিকেলে রাজধানীর পরীবাগে রূপসী বাংলা (সাবেক) হোটেলের বিপরীত দিকের সিগন্যালের সামনে কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য ও আনুমানিক দু-তিন বছর বয়সী এক পথশিশুর কথোপকথনের এ দৃশ্য এ প্রতিবেদকের চোখে পড়ে।
শিশুটির মা প্রতিবন্ধী (হাতকাটা)। মেয়েকে সিগন্যালে দাঁড় করিয়ে রেখে প্রাইভেটকার দেখলেই সাহায্যের জন্য ছুটে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ সদস্য শিশুটির সঙ্গে ভালোবাসার খুনসুটি করছিলেন।
‘বাঘে ছুলে এক ঘা, পুলিশে ছুলে আঠার ঘা, কানায়ও থানায় যেতে চায় না’ এ ধরনের বিভিন্ন প্রবাদবাক্য ও নানা নেতিবাচক কথাবার্তা পুলিশকে ঘিরে সমাজে প্রচলিত থাকলেও এর ব্যতিক্রমও যে নেই তার প্রমাণ কর্তব্যরত ওই পুলিশ সদস্য ও পথশিশুর কথোপকথনের ফোটে উঠেছে।
সোমবার বিকেলে পুলিশ সদস্য ও শিশুটির মধ্যে বয়সের বিশাল ব্যবধান থাকলেও দুজনের হেসে হেসে কথাবার্তা বলার দৃশ্য সাধারণ পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রথমে ভয় পেলেও একটু পরেই পুলিশের অস্ত্রের পাশে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে শিশুটি গল্প শুরু করে।
কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানান, একটু পরেই রাষ্ট্রপতি এ রাস্তা দিয়ে যাবেন। তাই এখানে ডিউটি করছেন। এত্ত ছোট ফুটফুটে শিশুটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে গল্প করছিলেন। পুলিশ সদস্যের নাম ইয়াসিন। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ।
এইচএসসি পাস করে আড়াইবছর আগে পুলিশে যোগদান করেন তিনি। এখন ডিগ্রি পাস করে এসআই পদে পরীক্ষা দেবেন বলে জানালেন। বর্তমানে মিরপুরের ব্যারাকে কর্মরত।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস