মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১১:৪৪:১৫

রাজধানীতে বাড়িভাড়া শুধু আর্থিক নয়, মানসিক অত্যাচারও

রাজধানীতে বাড়িভাড়া শুধু আর্থিক নয়, মানসিক অত্যাচারও

নিউজ ডেস্ক :  বাড়িভাড়া। রাজধানীর ভাসমান মানুষগুলোর জন্য যেন আর্থিক এবং মানসিক অত্যাচারের আরেক নাম। কোনভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না বাড়িওয়ালাদের দৌরাত্ম। ইচ্ছেমত ভাড়া আদায়, যখন তখন ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া আর বাসা ছাড়ার হুমকি, সবমিলিয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওেঠছে ভাড়াটিয়াদের জীবন। আইনজীবীরা বলছেন, আদালতের নির্দেশনার পরও দীর্ঘদিনেও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিশন গঠণ না হওয়ায় সুরাহা হচ্ছে না ভাড়াটিয়া-বাড়িওয়ালা বিরোধের।

ড্রইং, ডাইনিং একসঙ্গেই। পুরো বাসায় মোটে একটি মাত্র বেডরুম। তার ওপরে স্যাঁতস্যাঁতে পুরনো দেয়াল। কিন্তু ভাড়া শুনলে যে কারোর চোখই কপালে উঠবে। মাস শেষে যখন গুনে গুনে বাড়ি ওয়ালাকে দিতে হয় ১৬ হাজার টাকা, তখন অসহায় ভাড়াটিয়ার একমাত্র উপায়ই যেন সাবলেট।

বাড়িভাড়া নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর আগাঁরগাওয়ের কয়েকটি মহল্লা ঘুরে দেখা গেলো তার বাস্তব উদাহরণ।

এক ভাড়াটিয়া বলেন, 'সাতশ' স্কয়ার ফিটের বাসা এখন পনেরো হাজারে নিচে ভাড়া পাওয়া যায় না।'

অপর একজন বলেন, বাড়িওয়ালার আমাদের কোন কথাই শোনে না। তারা বলে, পারলে থাকো না হলে যাও।'

গুলশান, বারিধারা, ধানমণ্ডি কিংবা লালমাটিয়া। নুন্যতম ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা মাসিক আয় না হলে, এসব এলাকায় থাকা এখন অনেকটা স্বপ্নের মত। কাঠালবাগানও পিছিয়ে নেই কোন অংশে।

বাড়িভাড়ার নামে ভাড়াটিয়াদের উপর এক ধরণের যে নির্যাতন চলছে তার চিত্র অনেকটাই ফুটে উঠে কাঁঠালবাগান এলাকায়। নানা বিড়ম্বনা থাকলেও মাস শেষে গুনতে হয় বড় অংকের টাকা। ভাড়াটিয়ারা বলছেন, কর্মস্থল কিংবা সন্তানদের স্কুল কলেজের কারণে সুধিজনক এলাকায় বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। আর সেই সুযোগেই ইচ্ছা মতো ভাড়া আদায় করে নিচ্ছেন বাড়িওয়ালারা।

সরুগলি আর সামান্য বৃষ্টিতে হয় কোমর পরিমাণ পানি। তবুও এখানকার আকাশচুম্বী বাড়িভাড়ায় নিরুপায় ভাড়াটিয়ারা।

এত এত অভিযোগ যেন গায়ে মাখারই সময় নেই এই শহরের বাড়িওয়ালাদের।

ফার্মগেট এলাকার এক বাড়িওয়ালা বলেন, 'ভাড়ার বিষয়টি যারা বেশি বলছেন তারা আসলে ভুল বলছেন। ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়েই আছে।'

আইনের কার্যকারিতা না থাকাকেই বাড়িভাড়া বিরোধের অন্যতম কারণ বলছেন আইনজীবীরা। অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনের বলছে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজন আইনের আরো সহজীকরণ।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, 'এ ব্যাপারে সরকার বা সংসদ কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। বাড়ি ভাড়া আইনটা এক প্রকার অকার্যকর হয়ে আছে। এই জন্য আমরা বিকল্প পথে কিছু নির্দেশনা চেয়েছি।'

বাড়িওয়ালাদের দৌরাত্ম বন্ধে এলাকাভেদে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়ার পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে মনিটরিং কমিটি গঠনের পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।-সময় টিভি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে