নিউজ ডেস্ক: আদালতে নেওয়ার সময় রনিরাজধানীর ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ‘সব সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামি রনি ওই ঘটনার সময় মদ্যপান করা অবস্থায় ছিলেন। তখন তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খরাপ ছিল। সার্বিক দিক বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।’
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ইমাম আজ বুধবার (৩০ জানুয়ারি) রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে রনিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ টাকা অনাদায়ে রনিকে আরও ৬ মাস কারাগারে থাকতে হবে।
বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম বলেন, ‘একমাত্র আসামি বখতিয়ার আলম রনি নিউ ইস্কাটন রোডে ঘটনার সময় রাত ১টা ৪০ মিনিটে একটি প্রাইভেট গাড়ি দিয়ে যায়। কিন্তু এর ১০ মিনিট পরে আবার উল্টাপথে ফিরে আসে, সেটা সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার কাছ থেকে যে পিস্তলটি উদ্ধার করেন, সেটি দিয়েই গুলি ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু পিস্তলটির লাইসেন্স ছিল না। যদিও পরবর্তীতে আসামি পক্ষের আইনজীবী পিস্তলটির লাইসেন্স আছে বলে আদালতে একটি ফটোকপি করা নথি জমা দেন। কিন্তু লাইসেন্সে কয়টা গুলি উত্তোলন করা হয় এবং কয়টা খরচ করা হয়, তার কোনও তথ্য জমা দেওয়া হয়নি।’
মহানগর দায়রা জজ বলেন, ‘যেহেতু সাক্ষী-প্রমাণে দেখা যায় আসামি রনি উক্ত ঘটনা ঘটান, তার ছোড়া গুলিতে দুটি নিষ্পাপ প্রাণ ঝরে যায়, তাই সব সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামি রনি ওই ঘটনার সময় মদ্পান করা অবস্থায় ছিলেন। তখন তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খারাপ ছিল। সার্বিক দিক বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।’
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি কালো রঙের প্রাডো গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে অটোরিকশা চালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ এপ্রিল নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর একই বছরের ৩০ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বখতিয়ার আলম রনিকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারেই রয়েছেন রনি।
২০১৫ সালের ২১ জুলাই ডিবি পুলিশের এস আই দীপক কুমার দাস রনির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন নাহার।