বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ১১:৩৮:৪১

মৃত্যুও আলাদা করতে পারেনি দুই ভাইকে

মৃত্যুও আলাদা করতে পারেনি দুই ভাইকে

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে কাজ শেষে তিন ভাই অপু, আলী ও ইদ্রিস দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ছোট ভাই ইদ্রিস তার এক বন্ধুর ফোন পেয়ে দোকানের চাবি বড় ভাইদের বুঝিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়। পাশেই খেলা করছিল বড় ভাই অপুর (৩২) তিন বছরের ছেলে আরাফাত। এমন সময় ঘটে বিস্ফোরণ, ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মারা যায় এই পরিবারের তিন সদস্য।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত তিনটার ধ্বংসস্তুপ থেকে লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে নিহত দুই ভাই অপু ও আলীর মরদেহ আলাদা করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকারী সদস্যরা। তারা দুজন একে অপরকে জড়িয়ে ছিলেন। এ অবস্থায়ই একটি বডি ব্যাগে (মরদেহ যে সাদা ব্যাগে করে বহন করা হয়) করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে পাঠানোর পর দেখা যায়, দুই ভাইয়ের মরদেহের মাঝে রয়েছে শিশু আরাফাতের মরদেহ।
ভাইদের হারিয়ে শুধুই কাঁদছেন বোন (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই হয়তো দুই ভাই আরফাতকে মাঝে রেখে একে অপরকে জড়িয়ে রেখেছিলেন বলে ধারণা করছেন ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

একই পরিবারের এই তিন সদস্যের মরদেহ শনাক্ত করেছেন ছোট ভাই ইদ্রিস। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে মরদেহগুলো শনাক্ত করেন তিনি। স্বজন হারানোর শোকে ঢামেক মর্গে ঢুকরে কাঁদছিলেন ইদ্রিস। বলছিলেন, ‘এখন আমাকে শাসন করবে কে?’
আগুনে নিহতের স্বজনদের আহাজারি (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

ইদ্রিস জানান, ওয়াহিদ মঞ্জিলে তাদের কেমিক্যালের দোকান ছিল। সেখানেই পুড়ে মারা গেছেন তার বড় ও মেঝ ভাই। সঙ্গে মারা গেছে তার বড় ভাইয়ের ছেলে আরাফাত।

বুধবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনের কয়েকটি ভবনে আগুন লেগে একই পরিবারের তিন সদস্যসহ ৭০ জন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন উদ্ধাকারী দলের সদস্যরা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে