ঢাকা: মিঠু ও সোনিয়া দম্পতিদুই সন্তান রামিম ও শাহিরকে নিয়ে রিকশায় করে চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড় পার হচ্ছিলেন রাশিদুল ইসলাম মিঠু ও সোনিয়া আক্তার দম্পতি। চুড়িহাট্টার পাশেই রামিমের স্কুল বন্ধুর বোনের কান ফোড়ানোর দাওয়াত খেতে যাচ্ছিলেন তারা। রিকশাটি চুড়িহাট্টার মোড়ে যানজটে যখন আটকে ছিল, তখনই সিলিন্ডারে ভয়াবহ বিস্ফোরণটি হয়। মুহূর্তেই কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা, সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা। আগুনের ঝাটকা এসে লাগে সবার গায়ে। রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে রামিম কোনও মতে দৌড়ে কিছুটা দূরে সরে আসে। কিন্তু শাহিরসহ মিঠু-সোনিয়া দম্পতি সেই জট থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেননি। সেখানেই করুণ মৃত্যু হয় তাদের। রামিমকে ভর্তি করা হয়েছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। শরীরের ছয় ভাগ ঝলসে গেছে তার।
মিঠু-সোনিয়া দম্পতির মতো আরও অনেকেরই করুণ মৃত্যু হয়েছে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে, চুড়িহাট্টার মোড়ে সেই যানজটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও জানিয়েছেন সড়ক থেকে তারা অন্তত ১৪-১৫ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। পোড়া যানবাহনের আশেপাশে ও নিচে পড়েছিল এসব লাশ। ভোর থেকে লাশগুলো উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
মিঠু ও সোনিয়ার দুই সন্তান রামিম ও শাহিরপ্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চকবাজারের চুড়িহাট্টার শাহী মসজিদের মোড়টিতে এমনিতেই ভিড় লেগে থাকে। রাস্তার দুই পাশে মার্কেট-দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ। রাস্তাটি সরু হওয়ায় কোনও রকমে ওভারটেক করতে পারে দুটি প্রাইভেটকার। বুধবার রাতে শহীদ মিনারে ‘ভিভিআইপি মুভমেন্ট’ থাকায় পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনের সড়কে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। সেকারণে চুড়িহাট্টার সড়কে যানজট কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল। আর সেটাই যেন কাল হলো যানজটে আটকে থাকা লোকজনের। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর মুহূর্তের আগুনে সড়কের জটে আটকে থাকা লোকজন পুড়ে মারা যায় অত্যন্ত অসহায় ও করুণভাবে।