নিউজ ডেস্ক: পুরান ঢাকার চকবাজারে আগুনের লেলিহান শিখা ৬৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিলেও উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে বা ভাগ্যের জোরে বেঁচেও ফিরেছেন অনেকে। এমনই ১৫ জনের বেঁচে ফেরার কথা জানালেন চুড়িহাট্টার আনাস রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার রেজাউল হোসেন।
তিনি জানান, রাজমহল খাবার হোটেলের বিপরীতেই চারতলা ভবনের নিচে আনাস রেস্টুরেন্ট। দোতলায় রেস্টুরেন্টের অফিস। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে তিনিসহ ১৫ জন বৈঠক করছিলেন। সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান। এ সময় বারান্দার গ্রিল দিয়ে তাকিয়ে দেখেন আগুন জ্বলছে চারদিকে।
রেজাউল জানান, আগুন দেখে তিনিসহ সবাই নিচতলায় নেমে আসেন। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় বের হতে পারেননি। পরে ভবনের ছাদে চলে যান সবাই। ভবনের অন্যান্য তলায় কারখানা ও কর্মচারীদের মেস। বিস্ফোরিত হয়ে পারফিউমের কৌটা ছিটকে পড়ে ছাদে। তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পাশের একটি ভবনের ছাদে লাফ দেন তারা। সেখান থেকে তারা নিচে নেমে প্রাণে রক্ষা পান।
তিনি বলেন, এমন অগ্নিকাণ্ড এ জীবনে দেখিনি। যতক্ষণ না সেখান থেকে বের হতে পেরেছি, ততক্ষণ দম বন্ধ হয়ে আসছিল। ভাবছিলাম বেঁচে ফিরবো কি-না।
চুড়িহাট্টা মোড়ে শাহী মসজিদ এবং চুড়িহাট্টা ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ ও মোফাজ্জল হোসেন অভিন্ন ভাষায় জানালেন, তারা পড়া শেষ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাদ্রাসার চতুর্থ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় মসজিদে নামছিল। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দ শোনেন তারা। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের জানালা দিয়ে বাইরে আগুন জ্বলতে দেখে। এরপরই তারা দ্রুত চারতলায় উঠে যান।
আলী আহাম্মদ নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, তিন-চার দিন ধরে ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলার গোডাউনে পারফিউম তোলা হচ্ছিল। গোডাউন ভর্তি পারফিউমে আগুন লেগে তা ছিটকে পড়ে পাশের মসজিদ, রাস্তাসহ আশপাশের ভবনে।
ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলার প্লাস্টিকের দানা ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ১০ মিনিট আগে তিনি দোকান বন্ধ করে বাসায় যান। আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও দোকান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি। তার প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র পুড়ে গেছে বলে জানান তিনি।