ঢাকা: এক বালতি করে পানি ও বালু এবং অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার রাখা শর্তে পুরান ঢাকাতেই প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানা ও গুদাম রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
রবিবার (১০ মার্চ) বিকালে পুরান ঢাকার চকবাজার ‘বাংলাদেশ প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতি’র সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। পুরান ঢাকায় প্লাস্টিক কারখানা, কেমিক্যাল গুদাম ও দাহ্য পদার্থের গুদাম নিয়ে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীরা এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার একটু পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসএসসি) মেয়র সাঈদ হোসেন খোকন মতবিনিময় সভায় আসেন। এরপর চুড়িহাট্টিতে নিহতদের জন্য মোনাজাত শেষে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থাপকের কাছ থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে নেন সাঈদ খোকন। তিনি চেয়ার থেকে উঠে মঞ্চের সামনে চলে আসেন। তার সামনে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী, শ্রমিক, পঞ্চায়েত প্রধান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতা ও স্থানীয়রা বসেন। তাদের উদ্দেশে সাঈদ খোকন বলেন, ‘এই শহরে পরে থাকা প্লাস্টিক বস্তু আপনারা সংগ্রহ করে রিসাইকিলিং করে তা দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী প্রস্তুত করেন। তা না হলে এসব প্লাস্টিক বস্তু স্যুয়ারেজ লাইনে জমে আমার স্যুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে যেতো। আপনাদের এই কাজটি পরিবেশের জন্য ভালো। এ ছাড়া, দেশের অর্থনীতিতে আপনাদের ভূমিকা রয়েছে। আমি সবই জানি। আপনাদের অনেকেরই অল্প পুঁজির ব্যবসা। এই আয় দিয়ে আপনাদের পরিবার পরিচালিত হয়। তবে আমাদের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে, ব্যবসায়ীদের কথাও ভাবতে হবে। এখন এটার একটি সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আপনারা মতামত দিন কী করা যায়।’
মেয়র সাঈদ খোকনের এই বক্তব্যের পর ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মত নেওয়ার জন্য মাইক্রোফোন সভায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী তাদের অভিযোগ, অনুযোগ ও করণীয় বিষয়ে মতামত দিতে থাকেন। ব্যবসায়ীরা বলেন, প্লাস্টিক অতিদাহ্য পদর্থ না। অতিদাহ্য পদার্থ হিসেবে যে তালিকা রয়েছে, সেখানে প্লাস্টিকের নাম নেই। এটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’
অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের প্লাস্টিক ব্যবসায়ীদের কারখানা স্থানান্তর করার জন্য এর আগে একটি প্লাস্টিক পল্লি করে দেওয়ার কথা বলেছিল সিটি করপোরেশন, যা করা হয়নি। আমরা চাই, ঢাকার আশেপাশে একটি প্লাস্টিক পল্লি করে দেওয়া হোক।
মুক্ত আলোচনায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, প্লাস্টিক কারখানার জন্য প্লাস্টিক পল্লি, একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা, সব কারখানা মালিক, শ্রমিকদের জন্য ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তর করতে হলে ধীরে ধীরে করতে হবে।
এসময় একাধিক ব্যবসায়ী মত দেন, তারা প্রত্যেক কারখানা, গোডাউন ও দোকানে এক বালতি পানি, এক বালতি বালু রাখলে নিজেরাই আগুন নেভাতে পারবেন। কারণ পুরান ঢাকায় প্রায় ৩৫ হাজার দোকান, কারখানা রয়েছে। এসময় তারা অগ্নিনির্বাপণের জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইডভর্তি গ্যাস সিলিন্ডার রাখার কথাও বলেন।