শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৯, ০২:২৮:৫০

আগে বলো, ওরা কেমন আছে: মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা নীলিমা

আগে বলো, ওরা কেমন আছে: মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা নীলিমা

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারের আগুনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৯, ১১, ও ১৩ তলা।সেখান বহু লোকজন হতাহত হয়েছেন।তাদেরই একজন মাহবুবা নীলিমা। তিনি চাকরি করতেন ১১ ও ১২ তলার ডর্ড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।আগুন লাগার পর ১১ ও ১২ তলার লোকজনের আকুতি দেখেছে সবাই। ভবনের ভাঙা কাচের ফাঁক দিয়ে হাত বাড়িয়ে বাঁচার আকুতি হৃদয় স্পর্ষ করেছে সবার।

নীলিমাও ছিলেন তাদের একজন।একপর্যায়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। তাকে উদ্ধার করে নেয়া হয় কুর্মিটোলা হাসপাতালে। সেখানে বেডে নেয়ার পর নীলিমা নিজের পুড়ে যাওয়া শরীরের কথা চিন্তা না করে প্রথম প্রশ্নটি করেন, আগে বলো ওরা কেমন আছে?

সহকর্মীদের অবস্থা জানতে চেয়ে নীলিমা বলেন, 'ওরা কেমন আছে সেটা আগে বলো। সবাই নামতে পেরেছে? কে কোথায় আছে? কারও কোনো সমস্যা হয়নি তো। অন্য সবাইকে আর দেখছি না কেন?' নীলিমা ১১ তলা থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আনার পর সেখানে তাকে দেখতে যান ডর্ড কর্মীরা। সহকর্মীদের দেখেই বিলাপ করছিলেন নীলিমা।

পোড়া শরীরে নিজের কথা চিন্তা না করে সহকর্মীদের অবস্থা বারবার জানতে চান নীলিমা। হাসপাতালের পঞ্চম তলায় বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ওদের কি অবস্থা। তখন মুখে তার মাস্ক। চিকিৎসক অক্সিজেন দিয়ে রেখেছেন। স্বজন ও বন্ধুরা তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। বলছিলেন, চিন্তা করো না, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবি।কিন্তু কোনো স্বান্তনাই নীলিমার জন্য যথেষ্ট ছিল না। মৃত্যুর হাত থেকে ফেরা নীলিমার চিন্তা ছিল ভবনে আটকে পড়া সহকর্মীদের ঘিরে।

ডর্ডের পরিচালক সেঁজুতি দৌলা জানান, এফ আর টাওয়ারের তৃতীয়, বারো, তেরো, ষোলো ও উনিশ তলায় তাদের অফিস। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাদের অফিসের অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন। কেউ আবার নানাভাবে ভবন থেকে নেমে আসতে সক্ষম হন।

আগুন লাগার সময় সেঁজুতি ওই ভবনে ছিলেন। খবর পেয়েই তিনি ছাদে চলে যান। ছাদ থেকে লাফিয়ে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ওঠেন তিনি। এরপর পাশের ভবন দিয়ে নিচে নেমে নিজের জীবন বাঁচান।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে