নিউজ ডেস্ক : সবার পরনে সাদা শার্ট। দলনেতার গলায় টাই। কাঁধে র্যাংক ব্যাজ। ব্যবহার করেন দামি গাড়ি। কথা বলেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে। দেখতে কাস্টমস কর্মকর্তার মতো। তবে আসলে তাদের কেউ কাস্টমস কর্মকর্তা নয়, তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। কাস্টমস কর্মকর্তার ছদ্মবেশে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।
র্যাব জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মিরপুর থেকে এ চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা হলো, নুরুল হক (৫৭), শেখ আলম (৪৩), ফিরোজ আলম (৫৭), মোশারফ (৫৪), মাসুদ রানা (৪৩), রেনু মিয়া ওরফে রনি (৩৮)।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, ‘ছয় সদস্যের এ প্রতারক চক্রের প্রধান কাস্টমস সহকারী কমিশনার (এসি) পরিচয় দেওয়া নুরুল হক (৫৭)। দামি গাড়ি হাঁকিয়ে নিজের এ পরিচয়কে বিশ্বাসযোগ্য করেন তিনি। এই চক্রের সদস্যরা নিজেদের কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে, শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে স্বর্ণ বিক্রির কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে তাদের চক্রের দু-একজন সদস্য আছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট ভিকটিম ও গ্রাহক চিহ্নিত করে। তারপর মানুষ অনুযায়ী কৌশল নির্ধারণ করে প্রতারণা করে। প্রতারণার কৌশল হিসেবে প্রতারক চক্রটি শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীকে কাস্টমস অফিসার হিসেবে চাকরি দেওয়ার লোভনীয় অফার দিত। এজন্য মোটা অঙ্কের টাকা চাইতো। তারা বিশ্বাস অর্জনের জন্য কাস্টমস র্যাংক, ব্যাজ, ইউনিফর্ম চাপিয়ে দামি গাড়িতে করে নিরাপদ স্থানে গিয়ে সাক্ষাৎ করতো। টাকার অঙ্ক নির্ধারণ হওয়ার পর নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য তারিখ নির্ধারণ করে। সেই তারিখের আগেই মোটা অঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করে। টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল সিম বন্ধ করে তারা আত্মগোপনে চলে যায়।’
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির জানান, এ প্রতারক চক্র আরেকটি প্রতারণার কৌশল অবলম্বন করতো। তারা বিভিন্ন দোকানি ও ব্যবসায়ীদের কাস্টমসে জব্দ স্বর্ণের বার, বিস্কুট, জাপানি পার্টস, কটন সুতা, গোল্ডেন সুতা, স্বর্ণের চেন, মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদি কম মূল্যে বিক্রির অফার দিত।