শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২০, ১২:১২:৩১

অবশেষে মুখ খুললেন মজনু, বেরোচ্ছে কুৎসিত কাহিনি

অবশেষে মুখ খুললেন মজনু, বেরোচ্ছে কুৎসিত কাহিনি

নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধ’র্ষ’ণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ভবঘুরে মজনু পুলিশকে এবার তার প্রেমের কাহিনি শুনিয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে সে জানায়, মাস দেড়েক আগে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় আরেক ভবঘুরে নারী জেসমিনের সঙ্গে দেখা হয় তার। সেও বিভিন্ন রেলস্টেশনে ঘুরে বেড়াত। একপর্যায়ে তার সঙ্গে সখ্য তৈরি হয় তার। এরপর প্রেমের সম্পর্ক। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে মজনু।

এরপর দু’জন মাস খানেকের বেশি রাজধানীর শেওড়া, বনানী ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে কাটিয়ে দেয়। তবে কয়েকদিন আগে জেসমিন এক সিএনজি অটোরিকশা চালকের সঙ্গে পা'লিয়ে যায়। এরপর প্রেমিকের শো'কে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় সে।

এ ব্যাপারে মজনু জানায়, কয়েক বছর ধরেই নানাভাবে পথশিশু, ভবঘুরে নারীদের ফু'সলিয়ে আবার কাউকে ভ'য় দেখিয়ে শারী'রিক সম্পর্ক তৈরি করে আসছিল সে। রিমান্ডে মজনু যত মুখ খুলছে, ততই বেরোচ্ছে কুৎসিত কাহিনি।

এদিকে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর বুধবার মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির কাছে তুলে দেওয়া হয় মজনুকে। এরপর বিশদ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাকে। মজনু জানিয়েছে, তার কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। কখনও সে ট্রেনে চট্টগ্রাম, আবার কখনও নারায়ণগঞ্জ, কখনও গাজীপুরে চলে যেত। রেললাইন ও আশপাশ এলাকায় রাত কা'টাত সে। দীর্ঘদিন ধ'রে তার চুল নোংরা ও জটলাগা অবস্থায় ছিল। তবে জেসমিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার পর তা কেটে ছোট করে সে। জেসমিনেরও নোংরা জটলাগা চুল ছিল। সেই চুলও কেটে দেয় মজনু। সপ্তাহে দু-একদিনের বেশি গোসলও করা হয় না তার।

জানা যায়, ভবঘুরের মতো যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ানোয় সবাই তাকে ‘পা'গলা মজনু’ নামে ডাকে। শেওড়া, বনানী, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় এক নামে সবাই তাকে ‘পা'গলা মজনু’ নামে চেনে।

এদিকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মজনু আরও জানায়, গত রবিবার কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে টা'র্গেট করার সময় তার পরিচয় সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তার। সে মনে করেছিল, বি'কৃত স্বভাবে প্রায় নিয়মিত যেভাবে ‘শি'কার’ ধ'রে থাকে রবিবারের ঘটনাও তাই ছিল। এমনকি টা'র্গেট করা ওই তরুণীকে নিয়ে রেললাইনে ‘লালন-পালন’ করে সঙ্গে রাখবে এমন কথাও ভাবতে থাকে সে।

এরপর রাত গভীর হলে ওই তরুণীকে রাস্তার ওপারে রেললাইনে নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান ছিল তার। এজন্য সে দীর্ঘ সময় তার পাশে বসে থাকে। তবে ওই ছাত্রী যখন বারবার বাধা দিচ্ছিল, তখন ঘা'বড়ে যায় মজনু। এক পর্যায়ে তার ভালো পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে সে উপলব্ধি করে, ভুল টার্গেটে হাত দিয়েছে সে। পরিচয় নিশ্চিত হতে বারবার তাই মেয়েটির নাম-পরিচয় ও কোথায় পড়াশোনা করছে তা জানতে চেয়েছিল ওই কুলা'ঙ্গার। সে ভুল করে ‘বড় কোনো মানুষ’কে টা'র্গেট করেছে, এটা বুঝতে পারে।

এ ব্যাপারে ডিবির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নদীতে ঘরবাড়ি ভে'ঙে যাওয়ার পর নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যায় মজনু। সেখানে কিছুদিন রিকশা চালায় সে। এরপর রোকসানা নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে। পাঁচ-ছয় বছর আগে মাটিবাহী ট্রাকের ধা'ক্কায় রোকসানা বিমানবন্দর এলাকায় মা'রা যায়। ওই দু'র্ঘ'টনায় মজনুর দুটি দাঁত পড়ে যায় এবং আঙুল ভে'ঙে যায়। যদিও র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে মজনু তার দাঁত ভা'ঙার কারণ বলেছিল। ট্রেনের ছাদে ওঠার পর গাছের সঙ্গে ধা'ক্কা লেগে দাঁত পড়ে গেছে তার।

এ সময় মজনু জানায়, বর্তমানে তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা ছিল না। তবে কখনও রেলস্টেশনে ভিক্ষা করত সে। আবার কখনও পুরোনো পেপারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কুড়িয়ে বিক্রি করত। এ বাবদ যে টাকা পেত, তা দিয়ে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। ভাসমান যৌ'নকর্মীদের সঙ্গে শা'রীরিক সম্পর্ক তৈরি করতে যে টাকা লাগে, তা ব্যয় করার সামর্থ্য তার ছিল না। তাই রেললাইনে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন নারী, প্রতিবন্ধী নারী-শিশু ও ভিক্ষুকদের টা'র্গেট করত মজনু।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে