নিউজ ডেস্ক : ১০০ টাকার আসল নোটকে পানিতে সিদ্ধ করে রং তুলে ফেলার পর শুকিয়ে সেটিতেই দেওয়া হয় ৫০০ টাকার ছাপ। ফলে টাকার কাগজ ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য প্রায় অক্ষুন্ন থাকে। ছাপাও এমন নিখুঁত হয় যে দেখে জাল বলে বোঝার কোনো উপায়ই থাকে না। এতে সহজেই প্র'তারণার ফাঁ'দে পড়েন মানুষ। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাল মুদ্রা তৈরিতে জড়িত একটি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানায় র্যাব-২।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সেলিম, মনির, মঈন, রমিজা বেগম, খাদেজা বেগম ও এক কিশোর (১৫)। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাতে মিরপুরের ১২/ই ব্লকের ৬২ নম্বর বাসা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের ১৬১ নম্বর বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় চার কোটি (১০০০ টাকার নোট ) জাল টাকা ও ভারতীয় জাল রুপি (আনুমানিক ৪০ লাখ, ৫০০ ও দুই হাজার রুপির নোট) এবং জাল টাকা তৈরিতে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডাইস ও কাটার উ'দ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও প্রায় ২৫/৩০ কোটি টাকার জাল নোট বানানোর কাঁচামাল (কাগজ, কালি ও জলছাপ দেওয়ার সমাগ্রী) পাওয়া গেছে।
র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) জ্যেষ্ঠ এএসপি জাহিদ আহসান জানান, ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন এবং ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে অসাধু চক্র দেশব্যাপী জাল টাকা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বিশেষ করে কোরবানির পশুর হাটের লেনদেনকে কেন্দ্র করে জাল টাকার কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে জাল টাকা তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে। ১০০ টাকার নোট সিদ্ধ করে তাতে ৫০০ টাকার ছাপ এবং বিশেষ রং, কাগজ ও প্রিন্টার ব্যবহার করে এক হাজার টাকার জাল নোট তৈরি করে আসছিল তারা।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তারা সবাই জাল টাকা তৈরির সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের মধ্যে মনিরকে জাল টাকা ছাপানোর কাজে সহযোগিতা করত মঈন। সে প্রিন্ট করা টাকা নির্দিষ্ট আকার অনুযায়ী কেটে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। রমিজা বেগম কাগজে আঠা লাগানোর কাজে সেলিমকে সহায়তা করত। সাদা কাগজে নকল নিরাপত্তা সুতা বসিয়ে জলছাপ দেওয়ার কাজ করত খাদিজা বেগম ও এক কিশোর। জ'ব্দ করা বিপুল পরিমাণ জাল টাকা কোরবানির ঈদে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
করোনাকালে জাল টাকার ছড়াছড়ি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। তাই অপরাধীচক্রের বিরু'দ্ধে আগের মতোই ধারাবাহিকভাবে অভি'যান চালাচ্ছে র্যাব।