শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:৫৬:২১

সেই জাহাজবাড়ীতে ফিরতে চান বাসিন্দারা

সেই জাহাজবাড়ীতে ফিরতে চান বাসিন্দারা

নিউজ ডেস্ক: কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের জাহাজবাড়ী এলাকাবাসীর কাছে এখন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। শান্তিপূর্ণ এলাকা বলে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত ছিল কল্যাণপুর। জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানের পর এলাকাবাসী আতঙ্কিত। আতঙ্কে আছেন ওই বাড়ির বাসিন্দারাও।

ঘটনার রাতে ও পরের দিন বাড়ি ছেড়েছিলেন তারা। এখন নিজ নিজ বাসায় ফিরতে চাইছেন। এজন্য পুলিশের কাছে আবেদনও করেছেন তারা। পুলিশ বলছে তদন্ত ও নিরাপত্তার স্বার্থে ভাড়াটিয়াদের সতর্কতার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সুযোগ থাকলে অন্যত্র থাকতে বলা হয়েছে। তবে কেউ নিরুপায় হলে তাদের থাকতে পুলিশ সহযোগিতা করবে। পুলিশ সূত্রে ওইসব তথ্য জানা গেছে।

গত সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর পুলিশের বিশেষ শাখা সোয়াট এর অপারেশন স্টর্ম-২৬ এ ৯ জঙ্গি মারা যায়। পালানোর সময় হাসান নামে জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। গতকাল ওই জাহাজবাড়ীর সামনে গিয়ে দেখা যায়, বাসাটির সামনে মিরপুর থানার ৫ জন কনস্টেবল পাহারা দিচ্ছেন। বাসাটির মূল গেটে তালা ঝুলানো। ওই বাসার অনেক বাসিন্দা তাদের জিনিসপত্র নেয়ার জন্য বাসাটির সামনে অপেক্ষা করছিলেন।

পুলিশের সদস্যরা তাদের কাছে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। তারা জিনিসপত্র নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন।  এছাড়াও সাদা পোশাকে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। তারা এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়ির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

ওই বাড়ির বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, ঘটনার পর থেকে পাশের এক চাচাতো বোনের বাসায় দিন কাটছে। ভেতরে সব জিনিপত্র রয়েছে। কিছুই সঙ্গে নেই। ওইদিন রাতভর ওই বাসায় আটকা ছিলাম। পুলিশের সহযোগিতায় সেখান থেকে বের হয়ে আসি। এরপর আমার পরিবারের তিনজন সদস্য মিলে ওই আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি।


চারতলার আরেক বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার বলেন, রাত থেকে গোলাগুলি শুরু হয়। এরপর  রাত পেরিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসার মধ্যেই ছিলাম। পুলিশের সিগন্যাল পাওয়ার পর সেখান থেকে বের হই। তিনি আরো বলেন, বের হওয়ার সময় শুধু আমার পরনে কাপড় ছিল। ভেতরে সবকিছু আছে। এরপর কাফরুল এলাকায় আমার বড় ভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। বাসায় থাকার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছি। গতকাল একবেলা ছিলাম। পুলিশ আমাদেরকে বলেছে যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের আর কয়েকটা দিন বাইরে থাকার জন্য।


তৃতীয় তলার বাসিন্দা একরামুল হক বলেন, ঘটনার পর আমি এক বড় ভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। বাসার মধ্যে সব রয়েছে। জীবন-যাপনে কষ্ট হচ্ছে। আমরা বাসায় থাকতে চাচ্ছি। কল্যাণপুর কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রতন বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে পুলিশকে বলা হয়েছে এলাকার শান্তি ও নিরাপত্তা যেন বজায় থাকে এবং তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করেন।

এমন একটি ঘটনা ঘটে গেছে যা আমরা প্রত্যাশা করিনি। এলাকার সকল খবর আমরা পুলিশকে অবহিত করবো বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে। মিরপুর থানার ওসি ভূঁইয়া মাহবুব হাসান বলেন, ওই বাড়ির বাসিন্দারা অনেকেই বাসায় উঠতে চাইছেন।

কেউ জিনিসপত্র নিয়ে অন্য কোথায় চলে যাচ্ছেন। তাদেরকে পুলিশ সহযোগিতা করছে। আমরা ভাড়াটিয়াদের বলেছি যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদেরকে ওই বাসায় বসবাসের জন্য বলা হবে।-এমজমিন

৩০জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে