দিনাজপুর থেকে : তখন বেলা ১১টা ৪০ মিনিট! কিন্তু বিদ্যালয়ের গেট বন্ধ। সামনে দাঁড়িয়ে স্কুলের কচি কচি শিক্ষার্থীরা। ওই স্কুলের সামনে দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য যাচ্ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান।
গাড়ি থামিয়ে মন্ত্রী গিয়ে দেখেন বিদ্যালয়ের ঘর বন্ধ। শিক্ষার্থীরা বাইরে অপেক্ষা করছে কিন্তু বিদ্যালয়ে তখনো কোনো শিক্ষকের খবর নেই। এ অবস্থায় মন্ত্রী নিজেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শ্রেণি কক্ষে গেলেন ও ক্লাস নিলেন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার ২৩শে মার্চ এ ঘটনা ঘটে।
মন্ত্রীর সফরসঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুলসহ অনান্য সফর সঙ্গীরা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী থেকে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখে মন্ত্রী তার গাড়ি থামিয়ে বিদ্যালয়ে যান। তখন ঘড়ির কাটায় ১১টা ৪০মিনিট। তখনো কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়নি। বিদ্যালয়ের ঘরগুলো বন্ধ। শিক্ষকের আগমনের অপেক্ষায় আছে শিক্ষার্থীরা।
এই দৃশ্য দেখে মন্ত্রী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাবুর রহমানকে ফোন করেন। শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাবুর রহমানকে ফোন করার ১০ মিনিট পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমিনুল ইসলাম বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। তখনো অনুপস্থিত দুই সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমান ও রেজাউল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রী প্রধান শিক্ষককে ভৎসনা দিয়ে নিজেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করেন এবং একটি ক্লাস নেন।
এ বিষয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমিনুল ইসলামের সঙ্গে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মহেশপুরের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম, খলির উদ্দিন, আব্বাস আলীসহ গ্রামবাসীরা বলেন, মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছা মতো বিদ্যালয়ে আসেন। বেলা ১১ টা থেকে ১২টায় বিদ্যালয়ে আসেন শিক্ষকরা। আবার দুপুর ২টা বাজলেই চলে যান। এতে শিক্ষার মান একেবারে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
২৪ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস