শনিবার, ০৬ মে, ২০১৭, ০৬:০০:২৯

ফুটপাতে তরমুজ বিক্রি করেও আসিকের অর্জন জিপিএ-৫

ফুটপাতে তরমুজ বিক্রি করেও আসিকের অর্জন জিপিএ-৫

দিনাজপুর থেকে: দারিদ্র্যকে জয় করে এগিয়ে চলা ফুটপাতের তরমুজ বিক্রেতা আসিক এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তরমুজ বিক্রেতা মেধাবী আসিক ইসলাম দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর-শহরের খালপাড়া এলাকার হাসেম আলীর ছেলে।  

অভাবের কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি বীরগঞ্জ শহরের তাজমহল সিনেমা হলের সামনে ফুটপাতে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সময় দেওয়া ছিল তার নিত্যদিনের কাজ। তবে সেই সিনেমা হলটি বন্ধ থাকলেও বন্ধ থাকেনি আসিকের দারিদ্র জয়ের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা ব্যবসা। অদম্য ইচ্ছা শক্তিই প্রেরণা যুগিয়েছে তার দারিদ্র জয়ের। ব্যবসার পাশাপাশি সফলতা সে এনেছে লেখাপড়াতেও।  

বীরগঞ্জ কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করা আসিক ভবিষ্যতে বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করতে চায়।  

আসিকের বাবা হাসেম আলী একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী। মা আফিনা বেগম একজন গৃহিণী। পৌর-শহরের তাজমহল সিনেমা হল মোড়ে শীতকালে ফুটপাতে ডিম বিক্রয় করে এবং অন্যান্য সময় মৌসুমী ফল বিক্রয় করে তাদের সংসার চলে। সম্পদ বলতে বসতভিটার তিন শতক জমি। পরিবারের তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় সে।  

আসিক জানায়, দারিদ্র্যতার কারণে প্রাইভেট পড়তে না পারলেও শিক্ষকদের সহযোগিতার অভাব ছিল না। মায়ের পাশাপাশি বাবার উৎসাহে তার এই সফলতা। অভাব দূর করতেই লেখাপড়া ফাঁকে বাবার ব্যবসায় সহযোগিতা করি। স্কুল বন্ধ থাকলে দিনভর ফুটপাতে দোকানে বসি।  

সে আরো জানায়, দারিদ্র জয়ে শিক্ষার পাশাপাশি যে কোনো কাজে লজ্জার কিছু নেই। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করাতে লজ্জা কিসের। ভিক্ষা কিংবা কোনো অপরাধ তো করছি না।

আসিকের বাবা হাসেম আলী জানান, ইচ্ছে তো অনেক। তবে ফুটপাতে বসে অর্জিত অর্থে ছেলেকে কতদূর পড়াতে পারবো জানি না। নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আমাদের মতো গরিবের সংসার চালানো কঠিন পড়েছে। এখন নতুন করে একটি চিন্তা যোগ হয়েছে ছেলেকে নিয়ে। কোথায় ভর্তি করাবো। তার ভর্তির এবং পড়াশোনার টাকা আসবে কোথা থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি দোকানে বসতো সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এখনো জানি না তার পড়াশোনা চলবে, নাকি বন্ধ করে দিতে হবে। চিন্তায় আছি।

কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল ইসলাম জানান, আসিক খুব মেধাবী ছাত্র। সে কিছুটা লাজুক স্বভাবের। তবে সে নিয়মিত ক্লাস করতো। তার বাবা ফুটপাতে ব্যবসা করেন।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে