দিনাজপুর: ঐতিহাসিক দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে সুষ্ঠুভাবে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টায় অনুষ্ঠিত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল ইসলাম কাশেমী। জামাতে সুপ্রিম কোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রায় ২৩ একর আয়োতনের এই ঈদগাহ মাঠে ৬ষ্ঠ বারের মত আয়োজিত ঈদের জামাতে দিনাজপুরসহ আশেপাশের জেলা থেকে ৪ লক্ষাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের।
ঈদ জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আয়োজনে কোন কমতি ছিল না। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, অস্ত্রধারী আনসার, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা এবং সাদা পোশাকে পুলিশের নিরাপত্তার বলয় ছিল মাঠজুড়ে। সবমিলিয়ে সুষ্ঠুভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম গগণমাধ্যমকে বলেন, সুষ্টু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সকলের সহযোগিতা পেলে এই ময়দানে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। এই লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
ঈদগাহের পরিকল্পনাকারী ও উদ্যোক্তা স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, রাতে বৃষ্টি ও সকাল থেকে প্রচণ্ড রোদ ছিল, তাই লোক সমাগম কিছুটা কম হয়েছে। এরপরেও প্রায় ৪ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। মহান আল্লাহর কাছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া কামনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হচ্ছে সেই ধারা অব্যাহত রাখা ও নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানের ধারায় মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি সেই দোয়া কামনা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর সদর আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম-এর উদ্যোগে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে ২০১৫ সালে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ঈদগাহ মাঠের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।
নির্মানের প্রায় দেড় বছরে এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত করা হয়। উপমহাদেশে এর তুলনা করার মত অন্য কোন ঈদগাহ মাঠ নেই। এই ৫২ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে ২টি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এই সব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ হলো ৫শ ১৬ ফুট। ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে নির্মিত হয়েছে ঈদগাহ্ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ দেয়া হয়েছে। মিনার দুটির উচ্চতা ৫০ ফিট। যে মেহেরাবে খতিব বয়ান করবেন, সেটির উচ্চতা ৫০ ফুট। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট।