এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ঘরে বসে লাখ লাখ টাকা আয় করার জন্য এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং। যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য কোনো আলাদা বিনিয়োগ ছাড়াই এই আয় বর্তমান সময়ে অনেকটা স্বস্তির।
কিন্তু যে হারে এখন ফ্রিল্যান্সার এবং ফ্রিল্যান্সিং সাইট তৈরি হয়েছে, তাতে নতুনদের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
তবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে ব্যয় ও সময় প্রয়োজন। এর জন্য অনলাইনেই প্রয়োজনীয় ধারণা এবং দক্ষতা অর্জন সম্ভব। বর্তমানে অনলাইনে খুঁজলেই বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্স কাজের উপযোগী বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। আর তাই আপনি যে বিষয়ে কাজ শিখতে আগ্রহী, সে বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা নেয়ার জন্য গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করতে পারেন। প্রথম সপ্তাহে শুধু সার্চ করেই বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করুন।
আপনি যদি গ্রাফিকস ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু থেকে শিখতে চান তবে প্রাথমিক পর্যায়ের কোর্সগুলো করার চেষ্টা করুন। যদি কিছুটা কাজ পারেন তবে মধ্যম পর্যায়ের কোর্সগুলো করতে হবে।
অনলাইন টিউটোরিয়ালস: অনলাইনে অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিনামূল্যে টিউটোরিয়ালস পাওয়া যায়। এগুলো একটি বেসিক ধারণা দিতে সাহায্য করতে পারে।
অনলাইন কোর্স: Coursera, Udemy, Khan Academy সহ বিভিন্ন অনলাইন সাইট বিনামূল্যে একাধিক ফ্রিল্যান্সিং কোর্স অফার করে। এগুলো কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক দিকে নির্দেশনা দিতে সাহায্য করতে পারে।
সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: দেশের তরুণদের স্বাবলম্বী করে তুলতে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার। যুব উন্নয়ন অধিদফতর ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ৩ বা ৬ মাস মেয়াদি এসব প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এতে ভর্তি হতে কোনো অর্থ তো লাগেই না, উল্টো নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতা পাওয়া যায়।
এছাড়া অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজার জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো মেনে চললে উপকার পাবেন।
১) অনলাইনে সার্চ করার সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলেই সেগুলো বুকমার্ক বা সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। এ জন্য ৫ থেকে ১০টি ওয়েবসাইট খুঁজে বের করুন, যেখানে আপনার নির্বাচিত বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে এবং সেগুলো নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়।
২) ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ৫ থেকে ১০টি ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে বের করুন, যেখানে আপনার নির্বাচিত বিষয় প্রশিক্ষণের ভিডিও রয়েছে।
৩) ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার পছন্দের বিষয়ে চালু থাকা ২ থেকে ৫টি গ্রুপের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত থাকতে হবে আপনাকে। এতে বর্তমানে কোন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া সহজ হবে।
৪) অনলাইনে প্রায় সব বিষয়েই বিনামূল্যে উন্নত মানের কোর্স করা যায়। আর তাই আপনার পছন্দের বিষয়ে ২ থেকে ৩টা কোর্সে নিবন্ধন করে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
৫) অনলাইনে প্রায় সব বিষয়েই বিনামূল্যে ই-বুক পাওয়া যায়। অনলাইনে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আপনার পছন্দের বিষয়ে ই-বুকগুলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ডাউনলোড করে নিয়মিত পড়তে হবে।
কমপক্ষে এক থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত আপনার নির্বাচিত ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা ই-বুকগুলোর বিভিন্ন তথ্য ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। তবে সবকিছুই যে আপনাকে শিখতে হবে, তা কিন্তু নয়। প্রাথমিক ধারণা নেয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আলাদাভাবে লিখে রাখুন, যা পরবর্তী সময়ে আপনাকে সহায়তা করবে।
এক থেকে তিন সপ্তাহ প্রশিক্ষণ নেয়ার পর আপনার নির্বাচিত ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা ই-বুকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো এক জায়গায় সংরক্ষণ করে নিজে নিজেই বিভিন্ন কাজ করতে শুরু করুন।
এবার আপনি যেসব কমিউনিটি গ্রুপে যুক্ত আছেন, সেখানে নিজের করা কাজগুলো পোস্ট করতে পারেন। কাজের মান সম্পর্কে অন্যদের মতামত দেয়ার অনুরোধ করলেই অনেকে আপনার করা কাজের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরবে। ফলে নিজের কাজের সমস্যাগুলো অন্যদের কাছ থেকে জানা যাবে।
সমস্যাগুলো সমাধান করে আবারও একই কাজ করে গ্রুপগুলোত পোস্ট করুন। এভাবে ধীরে ধীরে আপনার কাজের সমস্যা কম হবে এবং মান উন্নত হবে।