মঙ্গলবার, ০৩ মে, ২০১৬, ০২:৪৬:৩৩

সত্যি বলছি, চমকে যাওয়ার মত এমন সত্য আগে কখনোই শুনেননি

সত্যি বলছি, চমকে যাওয়ার মত এমন সত্য আগে কখনোই শুনেননি

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ৫জন বন্দিকে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল ভারত সরকারের। কেন না, এই পাঁচ বন্দি জেল পালাতে গিয়ে এমন কিছু ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, যা মনে করতে আজও শিহরিত হয় অনেকেই। এপর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন জেল থেকে অনেকেই পালিয়েছেন। কিন্তু এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। তাহলে আসুন ৫ দুর্ধর্ষ জেল ভাঙার কাহিনি জেনে নিই—

১। শের সিংহ রানা : ২০০১ সালে ডাকাতরানি ফুলনদেবীকে হত্যা করে তিহার জেলে ঠাঁই হয়েছিল শের সিংহ রানার। একদিন নকল পুলিশ সেজে তিহার জেলে হাজির হয় রানার বাল্যকালের বন্ধু সন্দীপ ঠাকুর। আদালতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সে রানাকে নিজের হেফাজতে নেয়। জেল কর্তৃপক্ষের সামনে নকল কাগজপত্র জমা করে। বন্ধুর সাহায্যে এবার পালিয়ে যায় রানা।  

২। জগতার সিংহ হায়োরা : বাব্বর খালসার জঙ্গি জগতার সিংহ হায়োরা। ১৯৯৫ সালে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ছিল সে। চণ্ডীগড়ের বুরেইল জেলে বন্দি ছিল সে। জেল থেকে পালাতে রান্নাঘরের ব্যারাকের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খুড়েছিল জগতার। কিন্তু, ৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পর ধরা পড়ে যায় জগতার। এরপরেও এই জেলে আরও দু’বার সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল সে, কিন্তু, কোনওটাই কাজে আসেনি। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় ফের ধরা পড়ে জগতার। তৃতীয় সুড়ঙ্গ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করার আগেই তাকে অন্য জেলে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, নতুন জেলে জগতার ফের ৮ ফুট গভীর এবং ১০৮ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ খোঁড়ে। এমনভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছিল যা নিরাপত্তাকক্ষীদের ব্যারাকের তলা দিয়ে জেলের পাঁচিলের বাইরে বের করা হয়। এবার সফল হয় জগতার। ২০০৪ সালের ২ জানুয়ারি ভোররাতে জেলের আরও ৩ বন্দিকে নিয়ে পালিয়ে যায় সে। এরপরে আর ধরা পড়েনি জগতার।

৩। বেতাই জেলভাঙার ঘটনা : ২০০২ সালের অগস্টে বিহারের পশ্চিম চম্পারণের এই জেলের ৮ বন্দি পালিয়ে যায়। খুন-ডাকাতি ঘটনায় এরা অভিযুক্ত ছিল। কোনওভাবে একটি লোহা কাটার ব্লেড জোগাড় করেছিল এই ৮ বন্দি। তা দিয়ে কয়েদখানার লোহার গরাদ কেটে ফেলেছিল তারা। গরাদ কাটার সময়ে যাতে আওয়াজ না হয় তার জন্য হ্যাসকো ব্লেডে গ্রিজ মাখিয়ে নেয় তারা। এরপর জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। তবে, মোহন শাহ নামে এক বন্দি পাঁচিল টপকাতে ব্যর্থ হয়। ফলে সে ধরা পড়ে যায়।   

৪। চার্লস শোভরাজ : ভারতের অন্যতম এক কিংবদন্তী অপরাধী। যার অপরাধের তিক্ষ্ণতা তাক লাগিয়েছে দুঁদে পুলিশ থেকে তাবড় তাবড় গোয়েন্দাদের। চোরাকারবারে অভিযুক্ত ছিল শোভরাজ। তিহারে ১৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল সে। ভারতের সাজা শেষ হলে থাইল্যান্ডে শোভরাজকে প্রত্যর্পণ করার কথা ছিল। থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, কোনও অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ২০ বছরের মধ্যে কোনও অভিযোগ না থাকলে তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে। ফলে তিহারে ১৮ বছরের সাজা শেষে থাইল্যান্ডে ২ বছরের সাজা কাটাতে হত শোভরাজকে।

কিন্তু, অন্যরকমই ভেবেছিল শোভরাজ। বন্ধু ডেভিড হলের সাহাযয্যে তিহারে সে মাদক মেশানো লাড্ডু আনা্য়। এরপর জেলের নিরাপত্তাকর্মীদের সেই লাড্ডু খাইয়ে অচৈতন্য করে বন্ধু ডেভিডকে নিয়ে পালিয়ে যায় শোভরাজ। কিন্তু, দু সপ্তাহ পরেই গোয়ার একটি বারে ধরা পড়ে সে।  
 
৫। নটবরলাল : তাজমহল ও লালকেল্লাকে একাধিকবার বিক্রি করে অপরাধের শিরোনামে এসেছিল নটবরলাল। ১৯১২ সালে বিহারের সিওয়ান জেলার বাঙরা গ্রামে জন্মানো নটবর সকলের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিল। প্রতারণায় তার নিত্য নতুন কৌশল সকলকে তাক লাগিয়ে দিত। ১১৩ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল নটবরলাল। এরমধ্যে ৯ বার জেল ভেঙেছিল সে। একদম বৃদ্ধ বয়সে জেল থেকে পালাতে এক পন্থা নেয় সে। অসুস্থতার নাটক করে এইমস-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা আঁটে সে। দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে এক সুইপারের জিম্মায় রেখে দুই পুলিশ কর্মী অন্যত্র যেতেই চম্পট দেয় নটবরলাল। এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
৩ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে