বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৮:৫৩:২৯

নাপিত কিন্তু ১০৫টি গাড়ির মালিক!

নাপিত কিন্তু ১০৫টি গাড়ির মালিক!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ব্যবসা সূত্রে রমেশ বছরে শত কোটি টাকার লেনদেন করেন। তিনি ১০৫টি গাড়ির মালিক। রমেশের সংগ্রহে রয়েছে বিএমডব্লু ও রোলস রয়েস-এর মতো বিশ্বখ্যাত বিলাসবহুল গাড়িও। রমেশ পেশায় একজন নাপিত।

বেঙ্গালুরুর 'কোটিপতি নাপিত' হিসেবে পরিচিত ‘রমেশ বাবু’র জীবন উপন্যাসের উপাদানে ঠাসা।

ছোটবেলা থেকে বেশ কষ্টে বড় হয়েছেন রমেশ। ১৯৭৯ সালে মাত্র সাত বছর বয়সে বাবাকে হারান রমেশ। সংসার খরচ জোগাতে সম্বল ছিল মায়ের পরিচারিকার চাকরির বেতন আর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া চুল কাটার সেলুন থেকে মাসে পাঁচ টাকা খোরাকি।

রমেশের বাবা পেশায় একজন নাপিত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর দোকানের হাল ধরেন ছোট ভাই। কিন্তু মাসে মাত্র ৫ টাকা বড়ই কম। নব্বইয়ের দশকে কাকার সঙ্গে মায়ের বচসার ফলে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তাই শেষ পর্যন্ত চুল কাটায় হাত পাকান রমেশ। সেই সঙ্গে ভর্তি হন সান্ধ্য কলেজে পিইউসি পড়তে।

তার কাকা একটি ছোট গাড়ি কিনে তাক লাগিয়ে দেন। তাকে টেক্কা দিতে নিজের সঞ্চয় ও ব্যাঙ্কের ঋণের সাহায্যে ১৯৯৩ সালে একটি পুরনো মারুতি ভ্যান কিনে ফেলেন রমেশও। কিন্তু সুদের মাসিক কিস্তি মেটাতে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়। সেই সময় তার মা যাঁর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন, সেই মহিলা গাড়ি ভাড়া খাটানোর বুদ্ধি দেন তাকে। শুধু তাই নয়, ব্যবসার প্রাথমিক খুঁটিনাটি বিষয়ও রমেশকে শিখিয়ে দেন তিনিই। এছাড়া তার সাহায্যেই এক সংস্থায় গাড়ি ভাড়া খাটাতে শুরু করেন রমেশ।

আস্তে আস্তে ব্যবসার বহর বাড়তে শুরু করেন রমেশ। ২০০৪ সালে তার মালিকানায় যুক্ত হয় ৬টি গাড়ি। পাশাপাশি সেলুনের ব্যবসাও চলতে থাকে। এই সময় বিলাসবহুল গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা সকলেই চোট মাপের গাড়ি ভাড়া দিতেন। সবাইকে টেক্কা দিতে এবং ব্যবসা বাড়াতে ৪০ লাখ টাকা খরচ করে প্রথম দামি গাড়ি কেনেন রমেশ। সকলে অবশ্য তাঁকে বারণ করেছিল সেই সময়। তবু ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি। কিছু দিনের মধ্যেই মোটা টাকায় ভাড়া খাটতে শুরু করে সেই গাড়ি।

কার রেন্টাল ব্যবসায় এ ভাবেই একদিন বেঙ্গালুরুতে শীর্ষ স্থান দখল করে নেন রমেশ বাবু। বর্তমানে তার গ্যারাজে রয়েছে ১৫০টি গাড়ি, যার মধ্যে রয়েছে একাধিক মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ মায় রোলস রয়েজ। এই ব্যবসায় বছরে ১০০ কোটি টাকা রোজগার করেন তিনি। কিন্তু নিজের অতীত সম্পর্কে আজও ভীষণ ভাবে সজাগ রমেশ বাবু। বিত্তের জাঁক নয়, সহজাত বিনম্রতাই তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে