গাজীপুর থেকে: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক যুবককে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হাঁটানোর ঘটনা ঘটেছে।
২৪ জুলাই সোমবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে অভিযুক্ত ওই যুবককে জুতার মালা পরানো হয়।
এদিকে জুতার মালা পরানো অবস্থায় যুবকটির ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, যুবকটির গলায় ঝুলছে পুরনো জুতার মালা। দুই কানে দুই হাত চেপে ধরে হেঁটে যাচ্ছে গ্রামের রাস্তার ভেতর দিয়ে। পেছন থেকে এক চৌকিদার পেটাচ্ছেন, আর উল্লাস করছে চারপাশে জড়ো হওয়া শতশত মানুষ। এক পর্যায়ে ওই যুবকের শরীর থেকে রক্ত ঝরে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে রোববার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিল। এ সময় নয়াপাড়া গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে পোশাকশ্রমিক আনোয়ার হোসেন ওই ছাত্রীর হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্রীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে আনোয়ারকে গণধোলাই দিয়ে অচেতন করে ফেলে রাখে। পরে চৌকিদারের পাহারায় বিনা চিকিৎসায় এক ঘরে আটকে রাখা হয় আনোয়ারকে।
সোমবার সকালে গ্রাম্য সালিশে আনোয়ার তার দোষ স্বীকার করলে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে জুতাপেটার নির্দেশ দেন। এরপর চেয়ারম্যানের রায় মতো জুতার মালা পরিয়ে আনোয়ারকে ঘুরানো হয় পুরো গ্রামে।
তাছাড়া জরিমানা হিসেবে ওই ছাত্রীর নামে ৯ শতাংশ জমি আনোয়ারকে লিখে দেওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ছাত্রী তার নানার কাছে থেকে লালিত পালিত হচ্ছে। বাবা বহু আগেই তার মাকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন। পরে তার মাও বিয়ে করে সংসার করছে। অসহায় মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জরিমানা হিসেবে আনোয়ার ৯ শতাংশ জমি মেয়েটির নামে লিখে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই বিষয়ে কেউ থানায় জানায়নি। সোমবার রাত ৯টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস