কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে এফ এম কামাল হোসেন: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২৫টির বেশি আসন পাবে না। আর এ কারনে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কায়দায় বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
নেতা-কর্মীদের গুম, খুন করে ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি আজ শুক্রবার গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলঅ বিএনপির উদ্যোগে ঘাগটিয়া চালা ওয়েল ফেয়ার ক্লাব মাঠে আয়োজিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্’র স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। জনগনের ভোট ছাড়াই ১৫৪ জন এমপি হয়েছিলেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের পায়ের তলায় এখন মাটি নেই।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের আগেই সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচনকালিন সহায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সকল দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী করতে হবে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন হউক। যেন জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন। রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে সরকারকে জাতীয় ঐক্য গঠণের জন্য বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে জাতীয় কনভেনশন ডাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, হান্নান শাহ্ ছিলেন একজন সৈনিক। তিনি ছিলেন জাতীয় নেতা। স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি জিয়াউর রহমানের সাথে রাজনীতি করেছেন।
হান্নান শাহ্ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের শিপাহী বিপ্লবের সময় জিয়ার পাশে দাড়িয়েছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে ১/১১ সময়ও গণতন্ত্র রক্ষায় কথা বলেছেন। হান্নান শাহ দেশের দুর্যোগে, দলের দু:সময়ে কান্ডারী ছিলেন। হান্নান শাহ্ ছিলেন জিয়া পরিবারের বিশ্বস্থ ব্যক্তি ও বিএনপির নেতা কর্মীদের অভিভাবক।
হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নান আবেগ আপ্লুত বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা ছিল আমার ও আমার পরিবারের অভিভাবক। বাবা আজ বেচে নেই , বাবার অনুপস্থিতিতে আপনারাই আমার অভিভাবক। আপনাদেও সহযোগিতায় আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত।
স্মরণ সভায় কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিমের পরিচালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, হান্নান শাহ্র ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার, হান্নান শাহ্র ছোট ভাই মোবারক শাহ্, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মজিবুর রহমান, ডাঃ মাজহারুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছায়েদুল আলম বাবুল, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়া হান্নু, বিএনপি, যুবদল, জাসাস, মহিলা দল, ছাত্রদল, কৃষক দল, ওলামা দল ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ্’র বাড়ি সংলগ্ন জামে মসজিদে জুম্মা নামাজ শেষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে হান্নান শাহ’র কবর জিয়ারত করেন। দিনব্যাপী বৈরী আবহাওয়া ও অবিরাম বর্ষণ উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা কর্মীরা স্মরণ সভায় যোগদান করেন।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস