এফ এম কামাল হোসেন, কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া আসনের বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শাহ্ রিয়াজুল হান্নান কাপাসিয়া থানার ওসি’র বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তার প্রত্যাহার চেয়ে সংবাদ সম্মেলণ করেছেন।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় প্রার্থীর সাফাইশ্রীস্থ নির্বাচনী অফিসে জনাকির্ণ এ সংবাদ সম্মেলণে হামলা মামলা, প্রচার কাজে বাধা, পোষ্টারে আগুন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা-কর্মীদের হুমকী-ধমকির প্রতিবাদে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ্’র পুত্র বিএনপি দলীয় প্রার্থী শাহ্ রিয়াজুল হান্নান লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর নির্বাচণী প্রচারনার প্রথম দিন থেকে প্রতিপক্ষ আওয়ামীগের প্রার্থীর সন্ত্রাসী কর্তৃক বাধার সম্মূখিন হচ্ছি। গত ১৪ ডিসেম্বর সন্মানিয়া ইউনিয়নের আড়াল বাজারে প্রচারনার সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার উপর পর পর তিন দফা অতর্কিতে হামলা চালায়।
এ সময় তারা আমার ব্যবহৃত গাড়ি ও কর্মীদের মোটর সাইকেল ভাংচুর করে এবং আমাকে শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করে পাঞ্জাবী ছিড়ে ফেলে। এতে আমার ১০/১২ জন কর্মী আহত হয়।
এব্যাপারে ওই দিনই সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। অথচ কোন ধরনের ঘটনা না থাকলেও গায়েবী ঘটনা সাজিয়ে ১২ ডিসেম্বর উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে বিএনপির ৫০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
গত ১৩ ডিসেম্বর দূর্গাপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়িতে গায়েবী ঘটনা সাজিয়ে স্থানীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গাফ্ফার বাদী হয়ে বিএনপির ৮৭ জন কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। গত ১৪ ডিসেম্বর কড়িহাতা ইউনিয়নের বেগুনহাটিতে গায়েবী ঘটনা সাজিয়ে থানার এস আই বছির উদ্দিন বাদী হয়ে বিএনপির ৬১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর চিহ্নিহ সন্ত্রাসী কর্মীরা ১৪ ডিসেম্বর চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও বাজারে নির্বাচনী প্রচার মাইক ভাংচুর করে। ১৫ ডিসেম্বর বারিষাব ইউনিয়নের গিয়াসপুর বাজারে নির্বাচনী প্রচার মাইক আটক করে রাখে। এছাড়া উপজেলার রায়েদ, সিংহশ্রী ও টোক ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় আমার নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ও পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে এবং কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে আতংক ছড়াচ্ছে। এমনকি আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিমসহ ওয়ার্ড ভিত্তিক সম্ভাব্য এজেন্টদের বিরুদ্ধে গায়েবী ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বার বার থানা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে।
শাহ্ রিয়াজুল হান্নান আরো বলেন, সুপরিকল্পিত ভাবে আওয়ামীলীগ ও থানা পুলিশ প্রতিটি ইউনিয়নে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দিয়ে মাঠ ছাড়া করা এবং নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্র দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না এবং স্বাধিন ভাবে প্রচার কাজ করতে পারছে না।
তিনি গণতন্ত্র ও জনগনের ভোটাধিকার রক্ষা, অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে কাপাসিয়া থানার ওসি’র প্রত্যাহার এবং নির্বাচনে অংশ গ্রহনকৃত সকল প্রার্থীদের জন্য সমাজ সুযোগ সৃষ্টি করার দাবী জানান। কাপাসিয়ার নির্বাচনে বৈষমমূলক এহেন আচরনের প্রকৃত চিত্র তোলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মাস্টার, কাজী আফতাব উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসাইন বেপারী, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. এমদাদুল হক লাল প্রমূখ।