গাজীপুর : টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ বুধবার বিকেল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছেন তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষ। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় ১০টি শর্ত মেনে ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতি কাজ শুরু করেছেন তারা।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে। বিবাদমান তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষ তাদের স্ব-স্ব অভিপ্রায়ে ইজতেমা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছেন।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হলেও দু’পক্ষের গণ্ডগোলের কারণে কোনো পক্ষই ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতিকাজে অংশগ্রহণ করেনি। প্রতি বছর ইজতেমা অনুষ্ঠানের তিন মাস আগে থেকে মাঠের প্রস্তুতি কাজ শুরু করা হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর মাত্র ৮ দিন আগে ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতির কাজ শুরু করা হলো।
ইজতেমা শুরুর মাত্র ৮ দিন আগে মাঠের প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার বিকেলে ইজতেমা মাঠে ত্রিপক্ষীয় এক জরুরি বৈঠকে ইজতেমা শুরুর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে দুই ঘণ্টাব্যাপী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেলের নেতৃত্বে তাবলিগ মুরুব্বীদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় গাজীপুর সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তাবলিগের মুরুব্বীদের মধ্যে মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইঞ্জিনিয়ার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, মাহফুজুর রহমান, মুফতী নেছার উদ্দিন, মুফতি নূরুল ইসলাম ও মোস্তফা। আর সা’দপন্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইঞ্জিনিয়ার মুহিবুল্লাহ, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হারুন অর রশিদ, শহীদ উল্লা, মনির হোসেন, মুফতী ফয়সাল ও আতাউল্লাহ। দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা শেষে মন্ত্রী রাসেল মাঠের প্রস্তুতি কাজের উদ্বোধন করেন।
ইজতেমা মাঠে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল সবার সামনে তুলে ধরেন। সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১। আগামী ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা শুরু করে ১৬ ফেব্রুয়ারি মাগরিবের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ করে চলে যাবেন। ২। মাওলানা সা’দ অনুসারীগণ ১৭ ফেব্রুয়ারি ফজরের নামাজের পর ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করবেন এবং ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি সা’দপন্থী ওয়াসিফুল ইসলাম অনুসারীগণ ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে তাদের দুইদিনের ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ৩। মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা বুধবার থেকে ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতি কাজ শুরু করবেন। ৪। মাওলানা জোবায়ের পন্থীরা ১৬ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব আখেরি মোনাজাত শেষ করে মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন। ৫। জোবায়ের পন্থী লোকজন প্রশাসনের উপস্থিতিতে সা’দ পন্থীদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। ৬। দুই পক্ষের ইজতেমা শেষে ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতি কাজে লাগানো সরঞ্জামাদীর বিষয়ে দুই পক্ষের মুরুব্বীরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। ৭। ইজতেমা শেষে ময়দানে মুসল্লিদের ব্যক্তিগত মালছামানা ছাড়া বাকি সকল মালামাল স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকবে। ৮। মাওলানা জোবায়ের অনুসারী বিদেশি মেহমানরা দুইদিন ইজতেমা শেষে উত্তরা হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। ৯। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা সা’দ বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন না। ১০। ইজতেমা চলাকালীন উভয় পক্ষের তাবলীগ অনুসারী মুসল্লিরা টঙ্গীর আশপাশ এলাকার মসজিদে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন।