গাজীপুর থেকে : স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের ছেলে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ দীর্ঘ এক যুগ পর মুখ খুললেন।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে দেশের রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়া সোহেল তাজ বলেন, আমার মা আমাকে বলেছিলেন, সোহেল তুমি যা কিছুই করো না কেন, তোমার বাবা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানুষকে ভালোবেসে তার জীবন দিয়ে গেছেন। তুমি এই পরিবারের সন্তান। তুমি সব সময় মানুষের কল্যাণ যাতে হয় এমন কাজ করবে।
এদিকে সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরা এবং সুস্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিতে মানুষকে সচেতন করতে একটি টেলিভিশন শো নিয়ে আসছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। লাইফস্টাইল–বিষয়ক এই রিয়্যালিটি শো’র নাম ‘হটলাইন কমান্ডো’।
এ ব্যাপারে সোহেল তাজ বলেন, আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে আমি আমার উদ্যোগ নিয়েছি। এই ‘হটলাইন কমান্ডো’র মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যাগুলো তুলে ধরার জন্য টেলিভিশন ব্যবহার করতে চাচ্ছি। টেলিভিশন হচ্ছে যোগাযোগের একটি পাওয়ারফুল মাধ্যম।
এ কারণে আমি এই টেলিভিশনের মাধ্যমে একটি ইন্টারেক্টিভ আধুনিক এবং যেই ধরনের প্রোগ্রাম বাংলাদেশে কেন, এশিয়া মহাদেশেও কখনও হয় নাই সেটি ব্যবহার করবো। রাজনীতিতে আপনার বিশাল সুযোগ সুবিধা থাকতেও আপনি সেদিকে না গিয়ে কেন ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে কাজটা করতে এগিয়ে এলেন। তবে কি রাজনীতির প্রতি আপনার অনাস্থা তৈরি হয়েছে?
এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, রাজনীতির প্রতি অনীহা অনাস্থা এগুলো ঠিক না। আমি একটা পথ বেছে নিয়েছি জীবনে। আমি ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমি বিশ্বাস করি ব্যক্তি স্বাধীনতায়। আমি বিশ্বাস করি যে আমার স্বাধীনতা আছে। আমার জীবন যাত্রা কী হবে সেটা নির্ধারণ করার। আমি মনে করেছি এই পথটা আমার জন্য সঠিক। আর এই পথেই হয়তো বেশি মানুষের কল্যাণে আসতে পারবো। সেই বিশ্বাস থেকেই আমি ‘হটলাইন কমান্ডো’ বেছে নিয়েছি। মানুষের এবং সমাজের মধ্যে সচেতনতা করবো। তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে আমাদের পরিবর্তন আসবে।
সামনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, সেখানে থাকবেন কিনা?-এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই, আওয়ামী লীগ আমার দল, আমার বাবার দল, আমার মায়ের দল। আমার বাবা জীবন দিয়েছেন এই দলের জন্য, এ দেশের জন্য, এ দেশের মানুষের জন্য। আমার বাবা সারাজীবন এই দলের জন্য কাজ করে গেছেন, ছেলে মেয়ের দিকে নজর দিতে পারেননি। আওয়ামী লীগ আমাদের রক্তে।
“সেই আওয়ামী লীগ এবং সোনার বাংলাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমি আমার অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সহযোগিতাও করছি। আওয়ামী লীগ আমার রক্তের সংগঠন। এখন থেকে তো আমি কোনও দিন সরে যাব না। এখন আমাদের সুদিনে আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশকে আমার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করছি। আন্তরিকভাবে চেষ্টা থাকবে ‘হটলাইন কমান্ডো’র মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরি করা। এটা অনেক কঠিন হবে, কিন্তু আমার অবস্থান থেকে চেষ্টা করবো।”
সোহেল তাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হচ্ছে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য কন্ট্রিবিউট করা।