আমিনুল ইসলাম , জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর: ৬ বছরের শিশু আরাফাত। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। সবার হৃদপিন্ড ভেতরে থাকলেও জন্মের পর থেকেই তার হৃদপিন্ডটি বুকের বাইরে বের হয়ে আছে। মাঝে মাঝেই ব্যথা ছটফট করে সে। তখন দরিদ্র বাবার আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না।
আরাফাতের বাবা আব্দুল হক পিকআপ চালক। নিজের কোনো জমি জায়গা নেই। অন্যের জায়গায় মাটির একটি ঘর তুলে থাকছেন তিনি। আরাফাতের জন্মের আড়াই বছরের মাথায় তার মা সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে সৌদি আরব যান। তিন বছর পর দেশে ফিরে সরাসরি চলে যান বাবার বাড়িতে। এরপর আর স্বীমার বাড়িতে ফিরেননি তিনি। খোঁজ নেননি অসুস্থ সন্তান আরাফাতের।
আব্দুল হক জানান, তার স্ত্রীকে আনতে পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার শ্বশুর বাড়িতে গেলেও স্ত্রী তার স্বামীর সংসারে আসবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর থেকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত আরাফাত ফুপুর আদরে বড় হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পাইনশাইল দক্ষিণ পাড়া গ্রামে আব্দুল হকের বাড়িতে গেলে দেখা যায় আরাফাত তার ফুপু মনোয়ারা বেগমের কাছে বসে আছে। বুকের সামনে ঝুলে থাকা হৃদপিন্ডটি অনবরত নড়ে যাচ্ছে। বাবা আব্দুল হক ছেলেকে বোনের কাছে রেখে কাজে গেছেন।
মনোয়ারা বেগম জানান, আরাফাতকে স্কুলে দেয়া যাচ্ছে না। যদি কোনোভাবে তার হৃদপিন্ডে আঘাত লাগে তাহলে সে বাঁচবে না। তাই তাকে ঘরেই পড়ানো হচ্ছে। জন্মের পর থেকেই আরাফাতের হৃদপিন্ডটি বুকের বাইরে ছিল। তখন আকারে ছোট ছিল। এখন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদপিন্ডটিও বড় হতে থাকে।
তিনি জানান, ছোটবেলায় ঢাকার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে আরাফাতকে। চিকিৎসা করালেও সুস্থ হয়নি সে। বরং দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তার হৃদপিন্ডে মাঝে মধ্যে অসহ্য ব্যথা হয়। তখন সে ছটফট করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে হবে। কিন্তু দেশের বাইরে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ তাদের নেই। তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে আরাফাতের চিকিৎসার জন্য সহায়তা কামনা করেছেন।-জাগো নিউজ