সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪, ১১:২১:৫০

রোজা রাখলেই কি তারাবীহ নামাজ পড়তে হয়?

রোজা রাখলেই কি তারাবীহ নামাজ পড়তে হয়?

ইসলাম ডেস্ক : চলছে মুসলিম উম্মাহর বহুল প্রতীক্ষিত মাস রমাদান। মহিমান্বিত এই মাসে অনেকেই জানতে চান তারাবী নামাজ না পড়লে রোজা হবে কিনা। কিংবা তারাবীর নামাজের সাথে রোজার সম্পর্ক কি? ইত্যাদি নানা বিষয়ে।

তারাবির সঙ্গে রোজার সম্পর্ক নেই। তারাবি নামাজ একটা ফজিলতের বিষয়। এই নামাজ সুন্নাত। আর রোজা হচ্ছে ফরজ এবাদত। তবে তারাবি নামাজও একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদত।

বোখারি হাদিস থেকে জানা যায় নবী করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা পালন করল ইমানের সঙ্গে, তার পূর্বের যত গুনাহ আছে আল্লাহ তায়ালা সব মাফ করে দেবেন।

একই হাদিসের মধ্যে রাসুল (সা.) বলেন,যে ব্যক্তি রমজান মাসে কিয়াম করবে বা সালাতুত তারাবি আদায় করবে তার পূর্ববতী যত গুনাহ আছে আল্লাহ তায়ালা সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন।

তাই বলা যায়, রমজান মাসে তারাবির নামাজেরও গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু রোজা ও তারাবী নামাজ দুটি ভিন্ন ইবাদত। তারাবির নামাজ আদায় না করলে কারো রোজা হবে না বা তার ফজিলত থেকে মাহরুম হয়ে যাবেন। এমন বক্তব্য ঠিক নয়। এতে করে রোজা যে হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই রাতে ২০ রাকাত করে তারাবি নামাজ পড়িয়েছেন। তৃতীয় রাতে লোকজন জমা হলেও রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত হননি। পরদিন সকালে তিনি ইরশাদ করলেন, ‘আমি তোমাদের ওপর তারাবি নামাজ ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছি। তখন তো তা তোমাদের জন্য কষ্টকর হবে।’

নবী করিম (সা.) রমজান মাসে তারারির নামাজ কখনো জামাতে পড়েছেন। আবার কখনো কয়েক রাকাত জামাতে পড়ে হুজরায় চলে গেছেন। আবার কখনো একাকী পড়েছেন।

বুখারী শরীফের অপর এক হাদিসে নবী করিম (সা.) মুসল্লিদের নিজেদের ঘরে নামাজ আদায়ে উৎসাহিত করেন। সেখানে বলা হয়, বাধ্যতামূলক ইবাদত ছাড়া ঘরে বসে যে ইবাদত করা হয় তা নিশ্চয়ই উৎকৃষ্ট।

নবী কারীম (সা.) নিয়মিত তারাবির জামাত পড়াননি। বরং অধিকাংশ সময় তিনি একাকী তারাবির নামাজ পড়তেন। তিনি নিজে কেন জামাতের নিয়ম করেননি তা সাহাবীগণকে বলে গেছেন। জামাতের সাথে নিয়মিত (তারাবীর) নামাজ পরলে এ নামাজটিও উম্মতের উপর ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার আশংকা ছিল। তাই তিনি এর জামাতের নিয়মিত চালু করেননি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর তারাবি নামাজ ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আর থাকেনি। আর তাই হজরত ওমর (রা.) এর আমলে তারাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব কার্যকর হয়।

হজরত ওমর (রা.) মসজিদে নববিতে সাহাবিদের খণ্ড খণ্ড জামাতে ও একাকী তারাবির নামাজ পড়তে দেখেন। আর তখন তিনি সবাই মিলে এক জামাতে তারাবি পড়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন।

আর তখন থেকেই হজরত ওমর (রা.)এর খিলাফতকালে সাহাবিদের ইজমা দ্বারা ২০ রাকাত তারাবি নামাজ জামাতে আদায় করার রীতির প্রচলন হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে