শনিবার, ০৪ জুন, ২০১৬, ০৩:২৬:১৪

‘আমার নাম ক্যাসইয়াস ক্লে নয়, আমি এখন মোহাম্মদ আলী’

‘আমার নাম ক্যাসইয়াস ক্লে নয়, আমি এখন মোহাম্মদ আলী’

ইসলাম ডেস্ক : বিশ্বের সর্বকালের সেরা মুষ্ঠিযোদ্ধা সাবেক বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মুহাম্মদ আলীকে ইসলাম গ্রহণের পর নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। তার আগের নাম ছিল ক্যাসিয়াস মার্কাস ক্লে। তিনি ১৯৬১ সালের দিকে মুসলমান হন।

আমেরিকান কিংবদন্তী বক্সার মোহাম্মদ আলী খ্রিষ্টান হতে মুসলমান হওয়ার জন্য তার খেতাব, সম্মান ও প্রাণ নিয়ে রীতি মতো টানাটানি চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বীরদর্পে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‌‘আমার নাম ক্যাসইয়াস ক্লে নয়, আমি এখন মোহাম্মদ আলী।’

এছাড়ও মোহাম্মদ আলীর আরো কিছু বিখ্যাত উক্তি রয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো- ‘আমি ধূমপান করিনা, কিন্তু আমি আমার পকেটে একটি ম্যাচবক্স রাখি। যখন আমার হৃদয় কুপ্রবৃত্তির কারণে গুনাহ করতে চায়, তখন আমি একটি কাঁঠি জ্বালাই এবং আমার হাতের তালুর কাছে নিয়ে তাপ দেই। এবং আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করিঃ ‘আলী তুমি সামান্য এই তাপ সহ্য করতে পারছ না, কিভাবে জাহান্নামের অসহ্য তাপ সহ্য করবে ?”

১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি লুইসভিল কেন্টাকিতে আলী আফ্রিকান-আমেরিকান মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে ব্যার্থ হন পরীক্ষায় অনুত্তীর্ন হওয়ার কারণে। ১৯৬৬ সালে তিনি উত্তীর্ন হন।

ভিয়েতনামে যুদ্ধের জন্য মোহাম্মদ আলীকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি যুদ্ধে যেতে অস্বীকৃতি জানান এই বলে যে, ‘এ যুদ্ধ পবিত্র কোরান শিক্ষার বিরোধী। আমি এ যুদ্ধে সামিল হতে পারি না। আমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুমতি ছাড়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারি না। কোন খৃস্টানের কিংবা অবিশ্বাসীদের যুদ্ধে শরিক হওয়া আমাদের উচিত হবে না।’

তিনি আরও বলেন, তাদের (ভিয়েতনামীদের) সাথে আমার কোন বিবাদ নেই। তারা (ভিয়েতনামীরা) আমাকে কালো বলে গাল দেয় নি। অন্যত্র তিনি বলেন, তারা (মার্কিনিরা) কেন আমাকে উর্দি পরিয়ে দশ হাজার মাইল দূরে পাঠিয়ে ভিয়েতনামীদের উপর বোমা আর বুলেট মারতে বলবে যখন লুইসভিলেই (আলীর গ্রাম) সামান্যতম মানবাধিকার অস্বীকার করে নিগ্রোদের সাথে কুকুরের মত আচরণ করা হয়।

মোহাম্মদ আলী তিন তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন।১৯৬৭ সালে ভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতার কারণে গ্রেফতার হন এবং তার বক্সিং খেতাব কেড়ে নেয়া হয়। শুধু কি তাই, তার বক্সিং লাইসেন্সও স্থগিত করা হয়।

তিনি ৬১ টি বক্সিং প্রতিযোগিতার মধ্যে ৫৬ টিতে জয়ী হন। মাত্র ০৫ টিতে পরাজিত হন।১৯৮১ সালে এই মহান বক্সার অবসর গ্রহণ করেন।১৯৮৪ সালে আলীর পারকিসন্স রোগ ধরা পড়ে।বর্তমানেও তিনি এই রোগে ভোগছেন।

১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন সর্বকালের সেরা এই ক্রীড়াবিদ। বিমানবন্দরে আলীকে স্বাগত জানাতে লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। সেই সময় বাংলাদেশের নাগরিকত্বও দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে এসে এত খুশি হয়েছিলেন, ফিরে গিয়ে সবাইকে বলেছিলেন, ‘স্বর্গ দেখতে চাইলে বাংলাদেশে যাও।’
৪ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে