ইসলাম ডেস্ক: মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের উপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরয করেছেন। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। তবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যখন নামাজের পাটিতে দাঁড়াই অনেক সময় তখন শয়তান ওই নামাজী ব্যক্তির অন্তরে নানারকম প্ররোচনা দিয়ে নামাজে অমনোযোগী করে তোলার চেষ্টা করে। এতে অনেকের বেলায় শয়তান সফল হয় আবার অনেকের বেলায় শয়তান সফল হতে পারেনা।
এর থেকে বাঁচতে হলে ও নামাজ শুদ্ধভাবে পড়তে হলে আমরা যদি নামাযে যাহা পড়ি মেশিনের মতো না পড়ে বুঝে পড়ার চেষ্টা করতাম তাহলে ইনশা আল্লাহ্ শয়তান আমাদের নামাজকে নষ্ট করতে সফল হতে পারবে না।
আজ আপনাদেরকে কিভাবে সুরা ফাতিহাতে মনোযোগ রাখবেন সেই সম্পর্কে বলব। আপনাদের নিকট আমার অনুরোধ, যদি লেখাটি আপনার উপকারে আসে তাহলে অন্তত আপনার বন্ধু কিংবা আপনজনদের শেয়ার করবেন। আল্লাহ এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় প্রদান করবেন। নামাযে সূরা ফাতিহা পড়ার সময় এ হাদিসটির কথা খেয়ালে রাখলে এক একটি আয়াত পড়ার পর আল্লাহর প্রেমময় জওয়াবটা মনের কানে শুনবার জন্য বান্দাহকে থামতেই হবে। আল্লাহর জওয়াবে যে তৃপ্তি ও শান্তি তা তারাই বোধ করতে পারে, যারা আয়াতগুলো ধীরে ধীরে মজা নিয়ে পড়ে।
এ হাদিসে মহব্বতের এমন অগ্নিকণা রয়েছে যে, বান্দার দিলে ঈমানের বারুদ থাকলে এবং নামাযে সূরা ফাতিহা পড়ার সময় আল্লাহর আবেগময় কথার দিকে খেয়াল করলে আল্লাহর প্রতি ভালবাসার এমন আগুন জ্বলে উঠবে। নামাজ পড়ার সময় বান্দাহ নিজেকে মনিবের অতি কাছে বলে অনুভব করবে।
হাদিস শরীফে আছে, সূরা ফাতিহার এক এক অংশ তিলাওয়াত করার সাথে সাথে আল্লাহ এর জওয়াব দেন। এ হাদিসের কথাগুলো এমন আবেগময় ভাষায় বলা হয়েছে যা বান্দাহর মনে গভীর দোলা দেয়। হাদীসটি নিম্নরূপ:
হাদিসটির অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেলন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি নামাজকে আমার ও আমার বান্দাহর মধ্যে দুভাগে ভাগ করেছি। আর আমার বান্দাহ আমার নিকট যা চায় তাই পাবে। বান্দাহ যখন বলে, ‘‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।” অর্থ: যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। তখন আল্লাহ বলেন, “ আমার বান্দাহ আমার প্রশংসা করল।” যখন বান্দাহ বলে “আর রাহমানির রাহীম”। অর্থ: যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন “আমার বান্দাহ আমার গুণ গাইল” যখন বান্দাহ বলে “মালিকি ইয়াওমিদ্দীন” অর্থ: যিনি বিচার দিনের মালিক।
তখন আল্লাহ বলেন “আমার বান্দাহ আমার গৌরব বর্ণনা করল” যখন বান্দাহ বলে, “ইয়্যাকা না বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন। অর্থ : আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন “এ বিষয়টা আমার ও আমার বান্দাহর মাঝেই রইল। আর আমার বান্দাহর জন্য তাই যা সে চাইল (অর্থাৎ আমার ও আমার বান্দাহর মধ্যে এ চুক্তি হলো যে সে আমার কাছে চাইবে, আর আমি তাকে দেব)।
যখন বান্দাহ বলে “ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম সিরাতাল্লাযীনা আন আমতা আলাইহিম গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দোয়াললীন”। অর্থ : আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।” তখন আল্লাহ বলেন এটা আমার বান্দাহর জন্যই রইল আর আমার বান্দাহর জন্য তা ই যা সে চাইল।
নামাজে যে সুরা পড়ছি সেই সুরাগুলো যদি শুদ্ধভাবে পড়ছি কি না-তাতে মনোযোগ দেই তাহলে শয়তান বিভ্রান্ত করে সফল হতে পারবে না। কারণ আমি যা পড়ছি তার আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যই পড়ছি। কিন্তু পড়ার সময় যদি কোথায় বিন্দুমাত্র ভুল হয়ে যায় তাহলে তার অর্থও ভুল হয়ে যেতে পারে-এটা সব সময় আমাদেরকে মনে রাখতে হবে। তাহলে নামাজে মনোযোগ নষ্ট হবে না। এভাবে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা যদি মন থেকে পাঠ করা যায়, তাহলে মহান আল্লাহ পাক নিশ্চয় নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করে দেবেন।
২৮ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ