ঢাকা : পঞ্চম শ্রেণিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে মেধার প্রমাণ দেখিয়েছিল।রিশা। বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে অষ্টম শ্রেণিতেও সেই চেষ্টা করে যাচ্ছিল ঘাতকের ছুরিকাঘাতে নিহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা (১৫)।
ভালো করার চেষ্টার কোনো ত্রুটিই ছিল না তার। শুধু পড়াশোনায় নয়, অন্য গুণও ছিল রিশার। স্কুলের ড্রইং খাতায় এর স্বাক্ষরও রয়েছে তার। গ্রামীণ পরিবেশের মনোরম দৃশ্য গরুর গাড়ির ছবি এঁকেছিল রিশা। কিন্তু কে জানতো সেই ছবিই হবে রিশার আঁকা শেষ ছবি!
ছবিটা বুকে নিয়ে বিলাপ করতে করতে শুকিয়ে গেছে রিশার মায়ের চোখের পানি। মা তানিয়া হোসেনের সন্তান হারানোর বেদনা স্পষ্ট করে দেয় সেই ছবি।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বংশালের সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিসের গলির ১০৪ নং বাসায় গিয়ে শোনা যায় মায়ের বিলাপ। আত্মীয়-স্বজনদের সান্ত্বনাতেও মায়ের আজাহারি থামছিল না।
হাতে সেই ড্রইং খাতা ধরে বলছিলেন, এ বাসায় ১২ বছর ধরে বসবাস করে আসলেও গ্রামীণ পরিবেশ ছিল ওর খুব পছন্দ। স্কুলের খাতাতেও ওর মনোভাব ফুটে উঠেছে। সর্বশেষ স্কুলে ড্রইং খাতায় রিশা এঁকেছিল গরুর গাড়ি। কে জানতো সেই ছবিই হবে ওর আঁকা শেষ ছবি।
রিশার বাবা মো. রমজান হোসেন পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকার ক্যাবল (ডিশ) ব্যবসায়ী।
পরিবারের অভিযোগ, ৬/৭ মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়েছিল রিশা। যোগাযোগের জন্য দেয়া মোবাইল ফোন নাম্বারে রিশাকে বিরক্ত করছিল ওবায়দুর। ওবায়দুরই রিশাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে।
২৪ আগস্ট বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে ওভারব্রিজের ওপর রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওই বখাটে।
গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় মারা যায় রিশা।
ঘটনার পর তাকে গ্রেফতার করতে বৈশাখী টেইলার্সে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। গত কয়েদিন ধরে সে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে গ্রেফতার করতে সম্ভাব্য সব স্থানে অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশ। তাকে গ্রেফতারে আলটিমেটাম দিয়েছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
২৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম